শিরোনাম: |
মাছের ঘেরের পানি গ্রামবাসীর ঘরে ঘরে
|
জেলা প্রতিনিধি ॥
বোরো মৌসুমে মাছের ঘেরের ভেতর ধানের আবাদ করা হবে। এ জন্য ঘের থেকে পানি বের করে দেয়া হচ্ছে। এতে যশোরের কেশবপুরে দুটি গ্রামে শতাধিক বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। উপজেলার বাগডাঙ্গা ও মনোহরনগর গ্রামের বাসিন্দারা ঘেরের পানি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। দুই গ্রামের পাশে বিলগুলোয় রয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য মাছের ঘের। বছরের ৯ মাস সেখানে মাছ চাষ করা হয়। বোরো মৌসুমের শুরুতে মাছের ঘের সেচ দিয়ে পানি বের করা হচ্ছে। এতে অনেক বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। কারও উঠানে পানি এবং ঘরেও পানি ঢুকেছে। এর মধ্যেই মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে গ্রামবাসীর। বাগডাঙ্গা গ্রামের দুলালী সরকার বলেন, প্রায় চার মাস ধরে পানির মধ্যে বসবাস করছি। আগে বাড়ির পেছনে পানি ছিল। এখন পানি ঘরে ঢুকে পড়েছে। মনোহর নগর গ্রামের গৃহবধূ জয়ন্তী হালদার বলেন, ঘরের মধ্যে পানি ঢুকছে। মাচা করে ঘরের মধ্যে বসবাস করছি। শৌচাগার ভেসে গিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামের লোকজন গণমাধ্যমকে বলেন, গডাঙ্গার পূর্ব বিলে আবু সাঈদ ও পশ্চিম বিলে দ্বীন মোহাম্মদ মাছের ঘের করেছেন। ওই ঘেরের কারণে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানার অসংখ্য খাল বন্ধ। বর্ষা মৌসুমে খালের মুখ খোলা থাকে না। ফলে পানি নিষ্কাশিত হতে পারে নাই। মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার পূর্বাংশের ২৭টি বিলের পানি ডায়ের খাল দিয়ে নিষ্কাশিত হয়ে বিল খুকশিয়ার আট ফোকর স্লুইসগেট দিয়ে শ্রী নদীতে গিয়ে পড়ে। এ বছর শ্রী নদী পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়াই পানি নিষ্কাশন হয়নি। এতে ভোগান্তি বেড়েছে। এ বিষয় ঘের মালিক দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, তার ঘেরের মধ্যে কোনও খাল নেই। স্লুইসগেটের কাছে শ্যালো ইঞ্জিন বসিয়ে ঘেরের পানি সেচ দিয়ে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেশবপুর কার্যালয়ের উপ-বিভাগীয় প্রকোশলী মুন্সী আসাদুল্লাহ বলেন, আট ফোকরের পেছনে পলি ভরাট হয়ে গেছে। আর শ্রী নদীও ভরাট হয়ে গেছে। ফলে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। আট ফোকরের ওপরে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শ্রী নদীর প্রায় ২০ কিলোমিটার খনন না করা হলে। আগামী বর্ষা মৌসুমে কেশবপুর সদরে পানি জমতে পারে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম আরাফাত হোসেন জানান, জেলা সমন্বয় সভায় পানি নিষ্কাশনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করে ঘেরের পানি সেচ দেয়া চরম অনৈতিক। আশা করছি এ সমস্যা দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে। |