শিরোনাম: |
রপ্তানির আড়ালে চার প্রতিষ্ঠানের ৩৮০ কোটি পাচার
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
|
জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি পোশাক রপ্তানির আড়ালে জালিয়াতি করে দেশ থেকে প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে এক ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, দেশের চার প্রতিষ্ঠান আফ্রিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই টাকা পাচার করেছে।
জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া রপ্তানি দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থপাচার নতুন কিছু নয়। এমন অপরাধের খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে আসে। তেমনই আরেকটি ঘটনা ধরা পড়লো। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানিয়েছে, এক প্রতিষ্ঠানের বৈধ রপ্তানি নথি ব্যবহার করে অন্য একাধিক প্রতিষ্ঠান ভুয়া রপ্তানি দেখিয়ে দেশ থেকে ৩৮০ কোটি টাকা পাচার করেছে। রাজধানীর কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফখরুল আলম জানান, প্রতিষ্ঠানগুলো এক হাজার ৭৮০টি চালানের বিপরীতে ৩৮০ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ মিলেছে। তিনি জানান, কিছু প্রতিষ্ঠান পণ্য রপ্তানি করলেও, যথাযথ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসছে না। এমন অভিযোগে চট্টগ্রামে উত্তর পতেঙ্গায় অভিযান চালিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এর মধ্যে ঢাকার দক্ষিণখানের সাবিহা সাইকি ফ্যাশন নামের প্রতিষ্ঠান এক হাজার ৭৮০টি চালানে ৯৯৭ টন মেনস ট্রাউজার, টি-শার্ট, বেবি সেট, ব্যাগ, পোলো শার্ট, জ্যাকেট, প্যান্ট ও হুডি রপ্তানি করে। যার মূল্য প্রায় ১৮ কোটি টাকা। কিন্তু এ অর্থ দেশে আসেনি। আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব ও নাইজেরিয়ায় এসব পণ্য রপ্তানি হয়। রাজধানীর রমনা থানার এশিয়া ট্রেডিং কর্পোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান এক হাজার ৩৮২টি চালানের মাধ্যমে ১৪ হাজার ৮৫ টন টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস রপ্তানি করেছে। যার মূল্য প্রায় ২৮২ কোটি টাকা। কিন্তু এই অর্থও দেশে আসেনি। আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতার ও যুক্তরাজ্যে এসব পণ্য রপ্তানি হয়। রাজধানীর দক্ষিণখান বাজারের ইমু ট্রেডিং কর্পোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২৭৩টি চালানের মাধ্যমে দুই হাজার ৫২৩ টন টি-শার্ট, ট্রাউজার ও টপস রপ্তানি করেছে। যার মূল্য প্রায় ৬২ কোটি টাকা। কিন্তু এ অর্থও দেশে আসেনি। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায় এসব পণ্য রপ্তানি হয়। আর ঢাকার উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের ইলহাম নামের একটি প্রতিষ্ঠান ৩৯টি চালানের মাধ্যমে ৬৬০ টন টি-শার্ট, ট্যাংক টপ ও লেডিস ড্রেস রপ্তানি করেছে। যার মূল্য প্রায় ১৭ কোটি টাকা। কিন্তু এ অর্থও দেশে আসেনি বলে জানান শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফখরুল আলম। তিনি জানান, রপ্তানিকারকদের ঘোষণা অনুযায়ী এই অর্থের পরিমাণ ৩৮০ কোটি টাকা। তবে প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ যদি অর্থ পাচারের উদ্দেশেই এটা করা হয়ে থাকে, তাহলে অর্থ কমিয়েই এসব পণ্যের মূল্য ঘোষণা করা হয়েছে বলে ধারণা তার। এই চার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান লিমাক্স শিপার্স লিমিটেড নামে একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের জোগসাজশে বিল অব এক্সপোর্টে অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি এবং ভুয়া সেলস কন্ট্রাক্ট ব্যবহার করেছে বলেও জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এছাড়াও আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। তাদের উপর নজরদারি চলছে। অচিরেই ধরা হবে। |