বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, 2০২4
ফেসবুক লাইভে হাজারীর ভাষণ (১লা মার্চ ২০১৭)
হাজারিকা ডেস্ক॥
Published : Thursday, 2 March, 2017 at 11:08 PM, Update: 04.05.2017 4:47:56 PM

আসসালামু আলাইকুম। আজ পহেলা মার্চ। মার্চ মানেই স্বাধীনতার মাস। এ মাসেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। এ মাসেই তিনি স্বাধীনতার দিক নির্দেশনা দিয়ে ৭ই মার্চে ভাষণ দিয়েছিলেন। এ মাসেই অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এ মাসেরই ২৫ তারিখে পাক হানাদার বাহিনী বাংলার জনগণের উপর  ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং বাংলার জনগন বিশেষ করে ঢাকার পুলিশ লাইন এবং পিলখানায় বিডিআরেরা সে রাতে প্রতিহত করেছিল। প্রতিহত করতে গিয়ে অনেকে জীবন দিয়েছে। তারপরে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা এলো। সেই ঘোষণার পর থেকে পর্যায়ক্রমে সরকার গঠিত হলো। আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ  শুরু হলো। সেই যুদ্ধে পাক হানাদার  বাহিনী পরাজিত হলো এবং একই বছর আমরা ১৬ই ডিসেম্বর আমরা পরিপূর্ণ স্বাধীনতা পেলাম। অর্থাৎ বিজয় অর্জন করলাম। এই যে স্বাধীনতার মাসের স্বাধীনতার শুরু হলো। এই স্বাধীনতা খুব সহজে আসেনাই। আমাদের ত্রিশ লক্ষ লোকের জীবন দিতে হয়েছে। অসংখ্য মা-বোনের ইজ্জত গেছে ঘর-বাড়ি গেছে স্বহায় সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে ,ধ্বংস হয়েছে। বিশেষ করে এই যে বিপুল পরিমাণ মানুষ জীবন দিয়েছিল স্বাধীনতার জন্য আজকে এই দিনে আমি তাদের শুধু শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। আমি এই মাসে ফেনী অঞ্চলের দু-একটি ঘটনা স্মরণে আনতে চাই। একটি হচ্ছে, এ মাসেই আমরা ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করার পরই ঢাকাতেই তারা যেমন গণহত্যা চালিয়েছিল, তেমনি সারা দেশে তারা এয়ারসেলিং শুরু করেছিল। এতে সারা দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। সে সময় আমাদের ফেনীতে তিন তিন দিন এরোপ্লেন থেকে তারা গুলি বর্ষণ করেছিল। এই গুলিবর্ষণের এক পর্যায়ে বিশেষ করে জামে মসজিদের সামনে সেলিংয়ের সময় আমাদের এক সাংবাদিক ওয়াদুত আহত হয়ে পঙ্গু হয়ে গেছে। আমারই আপন ফুফাতো ভাই আব্দুল রব তিনি এখন খুবই অসুস্থ প্রায় ৮০ বছর বয়স হয়েছে তিনিও পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলেন এবং আমাদের গ্রামের মনু মিয়া নিহত হয়েছিলেন। এর ঠিক আগে সিও অফিসের সামনে ৭ জন পাকিস্তানি সেনা  অবস্থান নিয়েছিল। তাদেরকে সেই অবস্থান থেকে সরানোর জন্যে আমাদের আনসার, কিছু বিডিআর কিছু সাবেক সেনা সদস্য এবং জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে প্রায় ২-৩ দিন ধরে গোলা-গুলি হয়। শেষে একদিন তারা তাদের দু-একজন আত্মসমার্পণ করে কিছুকিছু দোতলায় নিহত হয়। একপর্যায়ে ৭ জনের সবাই নিহত হয় এবং এর পরেই লোকজন ফেনী শহর ছাড়া হতে লাগল। ফেনী শহর জন মানব শূণ্য হতে লাগল এবং আমি একাই ট্রাকে করে ওই লাশগুলোকে বুলবুড়িয়া গাংঙ্গে নিয়ে ফেলে আসি। ফেলে এসে দেখি খাজা সাহেবসহ তার সঙ্গে তখনকার সময়ের সর্বক্ষণিক কর্মী ওদের কেহ নাই। পরে শুনলাম তারা ভয়ে চলে গেছে। যদিও আমি তার ও আগে বেশ কিছু দিন পর ওদিকে চলে যাই এবং ট্রেনিং ক্যাম্পে যাই। এগুলো আমরা আমাদের স্মরণে রাখতে হবে। যেহেতু স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে এগুলো যুক্ত। আমি এ ব্যাপারে আর কোনো স্মৃতিচারণ স্বাধীনতা মাসের প্রতি বলতে চাই না। এবার আমি অন্যান্য প্রসঙ্গে চলে যাব। বিশেষ করে, আমি বোধহয় ঘোষণা দিয়েছিলাম, এবারে আমি ভাষণটি আমি সংক্ষিপ্ত করবো কিন্ত আমি দুঃখিত ভাষণটার শেষের দিকে অনেকগুলো ঘটনা এসে জড়ো হয়েছে। ফলে পারবো কিনা জানি না, যদি না পারি নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন। একে একে প্রসঙ্গগুলো টানবো। একটা হচ্ছে, হঠাৎ করে বিনা কারণে ফেনী থানার চতুর্থদিক ঘেরাও করে তারা ফলক দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বাড়িয়েছে। সেই ফেনী মডেল থানার ফলকটি উন্মেচণ করেছিলেন, আমাদের এখনো আছেন যিনি সেই এসপি। উন্মোচণ করার পরের দিনই বোধহয় শোনা গেল তিনি বদলি  হয়েছেন এবং সেই দিনই পৌরসভার লোকজন বিশেষ করে কাউন্সিলরা আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে এসে ওটা ভেঙে ফেলে দিয়েছে। তার নাম ফলকটাসহ নিয়ে গেছে। বিষয়টা পুলিশের। ওদের কাজ ওদের ব্যাপার ওরা উদ্ভোদন করেছেন ওদের ফলক লাগিছে । এখন পৌরসভার কি মাথা ব্যথা হলো, তারা এটাকে ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। তবে এটাকে ভেঙ্গে নিয়ে গিয়ে এক লজ্জাস্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা নিজেরাই আবার ওটা লাগিয়ে দিয়েছে। ওই বোকা কাউন্সিলরেরা বুঝতেই পারেনি। ওখানে সিসি ক্যামেরা আছে, ওখানে যে যা করছে সব কিছু দেখা যাবে। সেজন্যে এখন ডিআইজি এসেও গতকাল বলেছে, যে এটা এ্যামনে যাবে না। কার নাম আছে না আছে, তবে সিসি ক্যামেরায় যাদের দেখা যাবে তাদের রেহাই নাই। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই যে আবার লাগিয়েছে, এটা তাদের জন্যে নিশ্চয়ই লজ্জাস্কর এবং ডিআইজি পরবর্তীকালীন এই ঘোষণা তাদের জন্যে ভীতিকর। আমি মনে করি, যাওয়ার আগে বর্তমান এসপি তার শেষ খেলাটি খেলেই দিয়ে গেলো। তো এসপিকে আমরা কেউ সমর্থণ দিতে পারি নাই। তার ডিপার্টমেন্টও দেয় নাই। ফলে জালিম মুক্ত করার চেষ্টা করেও সে পারে নাই। তবে ফেনীবাসি শ্রদ্ধার সাথে তাকে চিরদিন স্মরণ রাখবে। আমরা রাখব এবং সময়মত তাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবো। তিনি টাকা পয়সা কি নিয়ে যাচ্ছেন না যাচ্ছেন আমরা তা জানি না তবে অন্যদের মত একেবারেই তেমনটি নয়। তবে তিনি নিয়ে যাচ্ছেন, ফেনীবাসির ভালবাসা। এই ভালবাসার চাইতে বড় মূল্যবান আর কোনো সম্পদ আছে বলে আমি মনে করি না। তাকে অভিনন্দন।
এবার কিন্তু আমি একটা ব্যক্তিগত এবং আমার পারিবারিক বিষয়ে আগেভাগে পরিষ্কার করে যেতে চাই। শরীরটাও ভালো নেই। আমাকে মেরে ফেলবার জন্যে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। যেহেতু জীবন-মরণের এই সন্দীকক্ষণে বিষয়টা আমার পক্ষ থেকে। এটা সত্য ২০০১ সালে আমি বলেছিলাম, আমার মৃত্যুর পরে,শুধু মৃত্যুর পরে আমার জমির মালিক হবে পৌরসভা। কিন্তু শুধু ভুলে গেলিই কারো সম্পত্তির মালিক অন্য কেউ হয় না। রেজিষ্ট্রি করে লিখিতভাবে তাকে সেটা দিতে হয় এবং একটি দলিল রেজিষ্ট্রির মাধ্যমে এটি সম্পন্ন হয়। পৌরসভা কোনোদিন আমার কাছে একটি দলিল নেবার চেষ্টাও করে নাই, আমিও তাদেরকে সেটা দেই নাই। এখানে দুটো প্রসঙ্গ , একটি হলো তারা দলিল রেজিষ্ট্রি করে নেয় নাই। আরেকটি হচ্ছে, তারা এটা বুঝতে রাজি নয় যে আমি বলেছিলাম আমার মৃত্যুর পরে এটা পৌরসভা পাবে। সেই জন্যে আজকে পরিষ্কার ঘোষণা দিতে চাই। এই লুটপাটের কারখানায় সম্পূর্ণ সম্পত্তি দিতে পারে না, দেয়া উচিত নয়। তাই আমার সেদিনকার সেই ঘোষণাটি আমি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। কোনো অবস্থাতেই আমার মৃত্যুর পরও আমার সম্পত্তি পৌরসভার কাছে যাবে না। তবে আমার জীবনদশাতেই অনেক সম্পত্তি আমি বিক্রি করে দিয়েছি। মক্কা সুইটস দুই কোটি টাকায় বিক্রি করেছি। আমি জহিরিয়া  মসজিদের কাছে ওখানে তারা একটি মার্কেট করেছে। মার্কেট করা স্বার্থেই তারা আমার কাছে অনুনয়-বিনয় করে এটা নিয়েছে। কিন্তু এখানেও একটা ঘটনা আছে সেটা হচ্ছে তাদের কাছে অল্প দামে বিক্রি করতে গিয়ে আমি শর্ত দিয়েছিলাম। এই মার্কেটের নামের সঙ্গে আমার আব্বা আব্দুল গণি হাজারীর নাম যুক্ত থাকতে হবে। তারা সেটা রক্ষা করেনি। এখন আমার আরেকটি ইচ্ছা আছে, আমি আমার সেই বাপের দেয়া সম্পত্তি থেকে বিক্রি করে কিছু অর্থ আমার হাজারী কলেজকে এবং কিছু অর্থ ডায়বেটিস সেন্টারকে দেব। পৌরসভা তো অনিয়মের আখড়া,দুর্নীতির আখড়া, চুরি ডাকাতির আখড়া। এটাকে দেয়ার কোনো  প্রশ্ন উঠতেই পারে না। কোনো টেন্ডার না , কোনো প্রকল্প গ্রহণ না, কোনো ওয়ার্ক অর্ডার না, কোনো কিছু না। শুধু আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে কাজ করার জন্য বলে, যা ইচ্ছ তা কোনে তদন্ত না, ইঞ্জিনিয়ারদের দেখা না। শুধু বিল দিয়ে দিচ্ছে। কোটি কোটি টাকা এভাবে হাতিয়ে নিয়েছে পৌরসভা। পৃথিবীতে কোনো পৌরসভা এমন অনিয়মের আখড়া হয়েছে আমার জানা নেই।
এখনই আমি আপনাদের কিছু জিনিস পরিষ্কার করে দেয়ার দরকার। আমি আগেও বলেছি, অকারণেই সন্দেহ লাগে। আমার ইচ্ছাটা পূরণ হবে কিনা, আমার মৃত্যুর পরে। আমি বলেছি মুজিব উদ্যানের পাশে আমার নিজস্ব জায়গায় আমার কবরটি দিতে হবে এবং আজকে আমি এটার সঙ্গে আর একটু যোগ করতে চাই। সেটা হচ্ছে আমার মৃত্যুর পরে, প্রথম জানাজাটি পাইলট হাইস্কুল মাঠে হবে। এটা আমার ইচ্ছা এবং সেখানে কেউ কোনো ভাষণ দিতে পারবেনা। কোনো রাজনৈতিক নেতা,কোনো বড় ধরণের ব্যক্তিত্ব কেউ না। কোনো ভাষণ আমার লাশকে সামনে রেখে হোক এটা আমি পছন্দ করি না। তবে ভাষণ নয় আত্মীয় স্বজনরা প্রায়শ দেখা যায়, লাশের সামনে দাঁড়িয়ে বলে ওনার কাছে কেউ টাকা পয়সা পেলে ওটা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেবেন। ওটা আমরা দিয়ে দিব। আর ওনার কারণে আপনারা কোনো  দুঃখ কষ্ট পেয়ে থাকেন আপনার ক্ষমা করে দিবেন। এটা হতেই পারে এটা হওয়া উচিতও। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এটার দরকার নাই। কেননা আমি এখনই ঘোষণা দিচ্ছি যদি কেউ আমার কাছে কিছু পাওনা থাকেন। আমি জীবিত থাকতেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি বাপের সম্পত্তি বিক্রি করে হলেও বা যেভাবেই হোক আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটা পরিশোধ করবো। দ্বিতীয়ত আমি এখনই আপনাদের কাছে বলছি, কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকি, যদি কারো কোনো দিন ক্ষতি করে থাকি, যদি কোনো কারণে আমার প্রতি মনে কষ্ট নেন আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। আল্লাহর ওয়াস্তে আমাকে মাফ করে দেবেন। আমি নিজেই আমার জন্যে আপনাদের কাছে চাইছি। অন্যকেহ আমার পক্ষ থেকে মাফ চাইবার দরকার নাই। কারণ যে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ফয়েজকে নিয়ে হয়েছে, মানুষ এসেছে নামাজ পড়তে সেখানে দেখে রাজনৈতিক বক্তব্য হচ্ছে। এটা যেমন ফয়েজকে কষ্ট দিয়েছে। মানুষকেও কষ্ট দিয়েছে। এগুলো বন্ধ করতেই হবে। এই যেসব যারা করছে, আল্লাহ তাদেররকে যেন নির্ভিত করে আমি ধ্বংস করার কথা বলি না।
আমি আবারো বলে যেতে চাই। এবার আমার মনে হয়। আমার যদি কিছু সম্পত্তি থেকে যায় মৃত্যুর পরে সেগুলো বিধি মোতাবেক আমার সকল ভাইবোনদের মধ্যে বিধি মোতাবেক বন্টন হবে। এর অন্যথা কোনো কিছু হবার সুযোগ নাই। এটা আমি লিখিত দিলেও হবে। না দিলেও হবে। এটা যেন ঠিকঠাক মত হয়। এটা আমার ইচ্ছা।
এবার যেটা নিয়ে একটু বিভ্রান্তি হয়েছিল আমি সে প্রসঙ্গে কথা বলতে চাই। প্রথমটি হচ্ছে ইজতেমা ময়দানের নাম। আমি বলেছিলাম, ইজতেমা ময়দানের নাম পরিবর্তন করার কিছু প্রস্তাবও দিয়েছি। এটার একটি ঐতিহাসিক কারণ হচ্ছে, ইজতেমা ময়দানটির কথা সবাই বলছিল দেবীপুরে। এই দেবীর একটি ইতিহাস আছে। শান্তি দেবী হচ্ছে, ফেনী ইসলামপুর রোডে একটি পতিতালয় ছিল। সেই পতিতালয়ে এই শান্তি দেবী ছিল। এই শান্তি দেবী আসলে মুসলমান ছিল। সেই কালে পতিতালয় ভর্তি হলে হিন্দু নাম দিতে হতো। অভিনয় করতে হলেও মুসলমানকে হিন্দু নাম দিতে হতো এবং দিলে কুমার আসনে নাম হচ্ছে নাসির খান। কিন্ত অভিনয়ের স্বার্থে সে দীলিপ কুমার হয়ে গেলে, সন্তোষ কুমার, শ্রতি এরা সবাই মুসলমান। কিন্ত অভিনয়ের স্বার্থে

ওরা হয়েগিয়েছিল হিন্দু। এই শান্তি দেবীও  মুসলমান ছিল। কিন্তু নাম রেখে দিয়েছিল হিন্দুর। এই শান্তি দেবীর সঙ্গে আমাদের বর্তমানের আলম আমাদের ডিসি অফিসের পাশে বাড়ি। আলমের পিতা শান্তি কোম্পনি তার নামটাও আমরা ঠিকমত জানি না। শান্তি কোম্পানির আশ্রিতা ছিল এই মহিলা। শান্তি কোম্পনি বলা ঠিক হচ্ছে না তবুও আশ্রিতাদের ভালবাসতেন এবং এক পর্যায়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হবার পরে যখন জনগণ তৎকালীন আক্রমণ করে ইসলামপুর রোডের ওই পতিতালয়কে তুলে দেয় তখন শান্তি কোম্পানি তার একটি আবাস করে দেয় এবং সেই হিসেবে তার নামেই নামকরণ হয় দেবীপুর। সে সময় যে কয়জন প্রভাবশালী মানুষ ছিল শান্তি কোম্পানি,সোনামিয়া হাজারী কেরামত বাচ্চুর বাপ, আমাদের আফজাল মিয়া। এদেরই একজন এই শান্তি কোম্পানির। তিনি তার কোম্পানির নামটাও দিলেন শান্তি বাড়ি। ওই শান্তি কোম্পানির বাড়ি হিসেবে তাদের বাড়িও শান্তি । সুতারাং একটা পতিতালয়ের নামে যে গ্রামের নাম। সেই নামের স্থানে আমাদের ইজতেমা হবে, এটা আর কেহ নাই বলুক আমি কিছুতেই পছন্দ করি না এবং কোনো দিনই করবো না। যে যা বলে বলুক।
এরপরে আর একটি বিষয় নিয়েও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি খুব বড় বিভ্রান্তি কিছু না, দ্বিমত আছে দেখা যাচ্ছে। থাকতেই পারে থাকুক। আমি এটা চাই। সেটা হচ্ছে কুমিল্লা বিভাগের সঙ্গে থাকাটাকে আমি সমর্থন দিয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমি যোগাযোগ করতে পারবো প্রথমত। দ্বিতীয়ত সোনাগাজীতেও কুমিল্লা দিয়ে যেতে হয়। সুতারাং আমি ঢাকা যাওয়ার সময় কাজ করতে পারি। ঢাকা থেকে আসার সময় করতে পারি। এর বাইরেও আমি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা আছে। কুমিল্লা হচ্ছে, ত্রিপুরা রাজ্যের বৃটিশ ভারতের অর্থাৎ পাক-ভারত উপমহাদেশের আগে বৃটিশ ভারতে ত্রীপুরা রাজ্য ও আরাকান রাজ্য দুটি ছিল। চট্টগ্রাম ছিল আরাকান রাজ্য আর কুমিল্লা ছিল ত্রিপুরা রাজ্যের শুধু অংশ নয় ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী। পাক-ভারত ভাগ হবার পরে এই ত্রিপুরা রাজ্যের অর্ধেক ইন্ডিয়াতে চলে যায়। ওখানে তারা আগরতলা রাজধানী করে। আর কুমিল্লা জেলা সদর হয়। এই জেলা সদরে তখন কুমিল্লা নামের জেলা সদরের সঙ্গে বা ত্রিপুরা রাজ্যেরও অংশ হিসেবে ফেনী তথা গ্রেটার নোয়খালী অর্ন্তভুক্ত ছিল। আমরা ছিলাম ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ। সেই ত্রীপুরা রাজ্যেটাই আবার আমরা একসাথের মত খানিকটা হয়ে গেলে আমি সমস্যার কিছু দেখি না। আমরা ত্রিপুরার অধিবাসী, চট্টগ্রাম হচ্ছে আরাকান রাজ্যের অধিবাসী। সেই ঐতিহাসিক কারণেও আমি কুমিল্লার পক্ষে। তবে যারা অন্য কোথায়ও চান তাতে আমি আপত্তি করি না। কেউ কেউ ফেনীতে বিভাগের সদর চান। সেটা চাইতেই পারেন। যদি কেউ ঢাকার বাইরে ফেনীতে বাংলার রাজধানী চান তাতেও আমি আপত্তি করবো না। কিন্তু যুক্তি অযুক্তিক একটা বিষয় আছে। সেটাকে বিবেচনা রাখার প্রশ্ন আছে। তবে আরেকটি ঐতিহাসিক ঘটনা আছে। তাহলে-কিন্তু ফেনীতেই আজকে এই বিভাগের সদর হতে পারত। সেটা হচ্ছে আইয়ুব আমলের প্রায় শুরুর দিকে আজম খান নামের লেফটেনেন্ট জেনারেল ছিলেন একজন যিনি গর্ভনার ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের তিনি এই এলাকায় সফর করতে এসে একদিন ফেনী রাজাজীর দীঘি, পাইলট হাইস্কুল, ফেনী কলেজ, বিজয় সিং ইত্যাদি দেখে মুগ্ধ হলেন এবং সেই কারণে তিনি নিজের উদ্যোগে, আমরা কেউ ফেনীবাসী দাবি করি নাই। তিনি ঘোষণা দিলেন নোয়াখালী জেলার সদর দপ্তর হবে ফেনীতে এবং তিনি ফাইন্ডেশন স্টল উদ্বোধণ করলেন। ফেনী জেলার সদর হিসেবে মহিপালের দীঘির পাড়ে। সেই সময়ে এটাকে অমান্য করে, এটাকে বাতিল করার জন্যে সমগ্র নোয়াখালীবাসী প্রতিবাদ শুরু করে। আমরা ফেনী থেকে কোন সমথর্ন জোগাড় করি নাই। খাজা সাহেব কোনে টুশব্দ করেন নাই। একটি মিটিং ও করেন নাই। রাজনৈতিক জীবনে এটি একটি ব্যর্থতা। মানুষের জীবনের সব কিছুতেই সফলতা থাকে না। আমি মনে করি যেহেতু আমরা তখন ছোট ছিলাম। আমাদের কিছু করণীয় ছিল না। কিন্তু খাজা সাহেব এ বিষয়টাকে নিয়ে সমর্থন দিলেন না ফলে আবার নোয়াখালীতেই সদর দপ্তর চলে গেল। যদি সেদিন সদর দপ্তর ফেনীতে থাকতো তাহলে আজকে ফেনী বিভাগই হয়ে যেত তাতে কারও কষ্ট করতে হতো না আমি মনে করি। যাই হোক, আমি আবারও বলছি, এখানে অন্যকোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, যেখানে সুবিধা বেশি আমরা সেখানে যাব। আমি ব্যক্তিগতভাবে আবারও বলছি, আপনাদের যা ইচ্ছা সমর্থন করেন। আমার আপত্তি নাই। আমি কিন্তু কুমিল্লার সঙ্গে থাকাটাকেই সমর্থন করি।
এবার গতকাল হাজী রহিম উল্লাহ সংসদে ভাষণ দিয়েছেন, ভাষণে সে কি বলেছে, আমার কাছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সে যতক্ষণ ভাষণ দিয়েছিল ততোক্ষণ সংসদ চুপচাপ ছিল। তার চাইতেও বড় কথা হচ্ছে, সংসদে হাজী রহিম ভাষণ দিচ্ছিল নিজামের বিরুদ্ধে। অনাবরত অভিযোগ এনে। এ জাতীয় ক্ষেত্রে সরকারী দলের কারো বিরুদ্ধে যখন কথা বলে, তখন সেটা একটু বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। কিন্তু হাজী রহিম যখন নিজামের বিরুদ্ধে কথা বলছিল, তখন কোনো বিশৃঙ্খলা তো নাই। আমি তাজ্জুব হয়ে গেলাম।  যে স্পীকার তাকে আরও বলার জন্য তাকে ২ মিনিট সময় বাড়িয়ে দিল। তাহলে পরিস্থিতিটা কি? আমার মনে হয় সহজেই অনুমিয় সবাই। হাজী রহিম অবশ্যই ঠিকঠাক বলেছে কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ দু-একটি কথা বলতে হয়তো ভুলে গিয়েছিল। যেমন হাজী রহিমকে হত্যা করার জন্যই তো ৩০-৪০ জন স্বসস্ত্র এলাকায় তার এলাকায় পাঠিয়েছি। র‌্যাবের হাতে তারা ধরা পড়েছে অস্ত্রসহ এবং সেদিন মোদি বাংলাদেশ সফর করতে এসেছিল ওদেরকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে নিজামরা সেদিন বেরিগেট দিয়েছিল গাড়ি ভাংচুর করেছিল। অনেক মানুষকে কষ্ট দিয়েছে। সেই একটি বড় ঘটনা, আমার কথাও সে বলেছে যদিও আমি তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছাড়াই বলেছে সমস্যা নাই। কিন্তু সে আমার পত্রিকাটি সে বন্ধ করে দিয়েছিল সম্পূর্ণ অবৈধভাবে, ভিডিও আছে, অনেক মন্ত্রীও এটা শুনেছে। সে কথাটি বলতে ভুলে গেছে। ইকবাল সোবাহানের কথাও সে বলেছে, ঠিকই বলেছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর তাকে উপদেষ্টা করে রাখবেন আমরা তাকে গালাগাল করতে থাকব, এটা তো প্রধানমন্ত্রীর গায়ে পড়ে। সেটা প্রধানমন্ত্রীর বুঝবেন আমরা অতো বড় বিষয়গুলো নিয়ে আর মাথা ঘামাতে চাই না। গতকাল আমার হাজারী কলেজের একটি নতুন ভবন উদ্বোধন করা হয়েছে। ভাল, সুন্দর, খুবই ভাল। প্রয়োজন ছিল কিন্ত সেই কলেজটির ওই ভবনটি কলেজের টাকায় করা হয়েছে। যেই কলেজের টাকা আমি রেখে এসেছিলাম। আমার সময় সংগৃহীত ওই টাকা রেখে এসেছিলাম। কলেজের টাকা। সাধারণত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টাকা আসে সরকারে ফ্যাসেলিটি থেকে করা হয়, জেলা পরিষদ থেকে করা হয়, বিশেষ তহবিল থেকে করা হয় কিন্তু এটা হয়েছে আমার নিজস্ব অর্থায়ণে। কিন্তু তবুও এই ভবনটির নাম দেয়া হয়েছে নিজামের বাপের নামে। এখন এটা প্রযোজ্য কিনা আমাদের দেশে কত জ্ঞানী-গুণী লোক আছে। জহির রায়হান ছিল, সালাম সাহেব ছিল এ রকম অসংখ্য সাংবাদিকেরা ছিল কারো নাম না দিয়ে আমারি অর্থায়ণের টাকায় কলেজ করে নিজের বাপের নাম দেয়া। আবার নিজে হাজারী, বাপের নামের সাথে হাজারী লেখে না। যাইহোক এখানেও লেখে নাই কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এরা আরও বড় চিন্তা করতে কেন পারে না, এটাই আমি চিন্তা করে ভেবে পাই না। আর এ ব্যাপারে মন্তব্য করব না। সেখানে অনেক কষ্টে আমার নামটি নিয়েছে, নিজামও নিয়েছে দু-একবার  কিন্তু যে ভবনটি উদ্বোধন হয়েছে। সেখানে কিসের ভবর উদ্বোধন হয়েছে সেটা তো জয়নাল হাজারী কলেজ ভবন উদ্বোধন সেখানে জয়নাল হাজারী কলেজ উদ্বোধন আর লেখেন নাই। ওইটা না লিখলেও কিছু আসে যায় না। এখন আরেকটি বিষয় হচ্ছে, নিজাম নিজের মুখে বলেছে অর্থাৎ আমার আমলে যেমন লেখাপড়ায় খুবই উন্নত ছিল কলেজটি। প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সে বলতে চাইছিল, তার আমলেও কলেজটি প্রথমস্থান অধিকার করেছে এবং খুবই ভালো অবস্থায় আছে। আসলে এটা একটা মিথ্যাচার । আমার কলেজটা নিয়ে মিথ্যাচার একে বারে গ্রহণযোগ্য নয়। আমি পছন্দ করি না। এখন প্রতিবছর ছাগলনাইয়া কলেজটি প্রথমস্থান অধিকার করে । যেকোনো প্রিন্সিপালকে জিজ্ঞেসা করলেই বলবে নিজামে আমলে কিংবা বর্তমানে আমার কলেজটি ফেনী জেলায় মধ্যে প্রথমস্থান অধিকার করে নাই। এই সব মিথ্যাকথা বলে লাভ কি সেটা আমার ঠিক বোধগম্য নয়। তবে আমার কলেজটি আরও উন্নত হবে, উন্নত হোক এটা আমি চাই। কিন্তু কোনো মিথ্যাচার পছন্দ করি না। আর কলেজের টাকায় বিল্ডিং করে নিজের বাপের নাম দেয়াও সমর্থন করি না। এবার আল্লাহর রহমতে বোধ হয় ঘটনা শেষ করতে পারবো, এবার শেষ খেলার প্রশ্নটি। আমি গতবার ভাষণে যতকথাই বলেছি, সেই কথা খুব বেশি অনেকের কানে ঢোকে নাই। শুধু শেষ খেলার কথা যেটা বলেছি, ওটা নিয়েই শুধু আলোচনা। সুতারাং সে প্রসঙ্গে আলোচনা করতেই হবে। সেই প্রসঙ্গে আলোচনা করেই আশা করি, আমি আমার আজকের আলোচনা শেষ করতে পারবো । সেটা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু যেভাবে শেষ খেলাটা খেলেছেন! একইভাবে আমি শেষ খেলা খেলতে চাই। আমি আমার ফেনীবাসীকে জালিম মুক্ত করতে পারবো। মুনাজাত ধরে আমরা শুধু দেশ স্বাধীন করতে পারি নাই। সুতারাং যেই পদ্ধতিতে যেইভাবে ইতিহাস বলে বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছিলেন, হানাদার মুক্ত করেছিলেন দেশকে। আমাদেরকেও সেভাবে হানাদার মুক্ত করতে হবে অর্থাৎ আমাদেরকে শেষ খেলার জন্যে খেলা শুরু করতে হবে। শেষ খেলার কিন্তু শুরু না করে শেষ করার প্রশ্ন আসে না।  এখন শুরুটা আমরা করব। যেমন বঙ্গবন্ধু আমি মনে করি, ছয় দফা যখন দিয়েছিলেন ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধু স্বাধীকার আন্দোলনটি শুরু করেছিলেন সরাসরি এবং তাতেই ওরা ক্ষিপ্ত হয়ে এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন শুরু করে। য্দ্ধু পর্যন্ত এসে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। আমাদের এখানেও আমরা যদি জালিম মুক্ত ফেনীর টুকটাক আন্দোলন শুরু করি। তাহলে তারা সেই পথ ধরবে এবং সেই পথ দরলে, যেই পথে বাংলার জনগণ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গিয়েছিল, সেই পথে যেতেই হবে। বিকল্প কিছু নাই। শুধু মোনাজাত করবে, রোজা রাখবো, কোনো লাভ হবে না। তবে যারা বিশ্বাস করেন না, জালিম কোনো দিন স্থায়ী হয় না।

আমি মনে করি, তারা আল্লাহর প্রতি ঈমান কম। আল্লাহর বিধান মোতাবেকই বলে দেওয়া হয়েছে, কোন জালিমই পৃথিবীতে থাকতে পারে না তাহলে এরাও পারবে না। এটা আল্লাহর বিধানেই বলা আছে। তাহলে আমাদের উপর যেই অত্যাচার নির্যাতন বা ফেনী বাসীর উপর যেভাবে হয়রানি, ফেনীবাসীকে যেভাবে জিম্মী করে এখানে যেভাবে চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতি, চুরি ইত্যাদি এসব থেকে মুক্তির জন্যে ফেনীবাসীকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। তাতে যদি কারো জীবনও যায়, বঙ্গবন্ধুইতো বলেছিলেন রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দিব, তবে আমাদেরকে তো রক্ত দিতে হবে। রক্ত দেয়া ছাড়া তো হয়তোবা আমাদের কোন জালিম মুক্তি হবে না। সেজন্যে বঙ্গবন্ধু যেমন ধীরে ধীরে শুরু করেছিলেন ৬ দফা দিয়েছিলেন তারপর তিনি অসহযোগ আন্দোলন করেছিলেন, হরতালও করেছেন ৭ই জুনে হরতাল হয়েছিল। মনুমিয়ারা মৃত্যু বরণ করেছিল। এভাবে করতে করতে একদিন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। কোন এক সময় অসহযোগ আন্দোলন ও করেছেন। এভাবে দীর্ঘদিন আন্দোলনের একটা পর্যায়ে মহাত্মা গান্ধীও ভারত স্বাধীনতার জন্যে অসহযোগ আন্দোলন করেছিলেন। অসহযোগ আন্দোলনও কিন্তু এটেম বোমার চাইতে শক্তি অনেক বেশী হয়। গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলন সমগ্র ইংরেজদের টনক নাড়িয়ে দিয়েছিল এবং বুঝেছিল এদেশে থাকার সুযোগ নাই, সেজন্যে শান্তিপূর্ণ একটি আন্দোলন ঘোষণা দেব, আমি আজকে সেই আন্দোলনে যদি সাড়া পাই অর্থাৎ সেই আন্দোলন হচ্ছে পরীক্ষা, যারা ভেবেছিলেন আমি ওই দিনই লাফদিয়ে এসে চতুর্দিক তছ নছ করে ফেলবো, সব অত্যাচারি যুলুম বাজদের শেষ করে ফেলবো, এটা তো সম্ভব না এটা কেউ কোন দিন করে নাই, পানেও নাই। আমি একা কি শক্তি, আমার কি আছে, শক্তি হচ্ছে আমার জনগন, আমার আত্মবিশ্বাস আছে, খবর পাই জনগণ আমার পক্ষে, আমার অস্ত্র হচ্ছে জনগন। সেই জনগনকে নিয়েই আমি নামতে চাই। কারণ শেষ খেলা এই জন্যে জনগণ আমার সঙ্গে থাকবে, যদি বিশ্বাস হয় তাহলে জনগণের সঙ্গে যাব। যদিও বঙ্গবন্ধু নিজেই কখোনো মিছিল মিটিং বা যুুদ্ধের ময়দানে ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন তখন কারাগারে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত কাজ সমাধা করেই আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জনগণ দেশ স্বাধীন করেছিল। সেই হিসেবে আমি আজকে কথা বাড়াবনা, বেশি ইতিহাস টানবো না। আপনারা সবাই জানেন যে , ফেনীতে কি হচ্ছে, একরাম হত্যা হয়েছে, বিচার নাই। রিনা হত্যা হয়েছে ধর্ষণ হয়েছে, বিচার নাই। অর্থাৎ গত দশ বছরে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে পাঁচগাছিয়া থেকে চাদাবাজি করতে গিয়ে এক গর্ভবতী মহিলার পেট থেকে বাচ্চা বের হয়েছে। এরকম ভাবে আমাদের স্বর্ণের দোকান লুট করেছে, আমাদের নির্মাণ সুপার মার্কেট লুট করেছে। হাজারো ঘটনার সমস্ত কিছু আমার হাজারিকা প্রতিদিন পত্রিকায় লিপিবদ্ধ আছে। ইতিহাসে এরকম ঘটনা অন্য কোথাও আছে কিনা জানি না, আপনারা প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই দেখবেন,  কোন না কোন জায়গায়, কোন না কোন খুনি, কোন না কোন বার্মাদের ফাঁসি হচ্ছে। বিচার হচ্ছে, প্রতিদিন বিচারের খবর আছে। কিন্তু গত দশ বছরে সেই যে একরাম হত্যা থেকে শুরু করে আরো, যে সব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে হাজী রহিমকে হত্যা করার জন্য যারা অস্ত্রসহ ধরা পড়লো, তারা প্রতিনিয়ত কত ইয়াবাসহ ধরা পড়ছে, কতো হিরোইন সহ ধরা পরছে, কত অস্ত্র ধরা পড়েছে, কত যে, খুন খারাবি হচ্ছে তার কোন ইয়ত্তা নাই।  হাজী রহিম একটা কথা সে সংসদে বোধহয় ভালোই বলেছিল, সে বলেছিল হাজারী ভাইয়ের আমলে লড়াই হয়েছে, লড়াই হয়েছে বিএনপি জামাতের সঙ্গে, সেখানে তাদের লোক আমাদের লোক মারা গেছে ঠিক কিন্তু এখন আমাদের লোকই মারা যায় এবং আমাদের লোকেরাই মারে, একরামকে বিএনপি জামাতরা মারে নাই, একরামকে আমাদের লোকেরাই মেরেছে। পুলিশ যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে তারা প্রত্যেকেই আমাদের লোক বলা যায়। মিনার ছাড়া, তাহলে আমাদের লোকদের কেন আমরা মেরে ফেলছি। কি কারণে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগকেই মারছে এটা সরকারকে দেখতে হবে। যদিও অতিসম্প্রতি পার্লামেন্ট মিটিংয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিতর্কিত প্রায় ৫০ থেকে ৭০ জনকে নমিনেশন দেবেন না। শুধু নমিনেশন না দিলেই কি তাদের শাস্তি হলো, তা আমি মনে করি না। এদেরকে শাস্তির অ্যাওয়াড দেয়া প্রয়োজন। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই সব না করে। তারপরেও এটা একটা শাস্তি,যদি সে দুর্বল হয়ে গেলে তার এসব অপকর্মের খেসারত দিতে হবে তাদেরকে। সে কারণে বলি, হতাশ হবার কিছু নাই। শুধু বলি এই যে, বিচার হীনতা একরাম হত্যার দাবিতে অন্যান্য যেভাবে বেদখল করে অবৈধভাবে একজনের জমি আর একজন নিয়ে যাচ্ছে। শত শত লোককে বঞ্চিত করে তাদের জমি-জমা দখল করছে। এখন ফেনীতে কোন চাঁদাবাজির কারণে কেউ ঘর তুলছে না, সিন্ডিকেট ছিল কমপক্ষে একশ। জমি-জমা বিক্রির সবাই ঘরে বসে গেছে, ব্যবসা বাণিজ্য কিছু নাই। কোন নির্মাণ কাজ নাই যেহেতু সিন্ডিকেটের চাঁদার ভয়ে সবাই এই অবস্থা। এখন আমি ২৬শে মার্চ ফেনীবাসী যারা অত্যাচারিত, নির্যাতিত এবং যারা বঞ্চিত। যাদের আত্মীয় স্বজন খুন হয়েছে, গুম হয়েছে, তাদের সকলের কাছে অনুরোধ আপনারা সবাই ২৬শে মার্চ বিকেল ৫টা আমাদের ওয়াপদা মাঠে জড়ো হবেন। ওয়াপদা মাঠে যরো হয়ে শান্তিপূর্নভাবে কোন লাঠি ছোটা অস্ত্রসস্ত্র তো প্রশ্নই নাই। শান্তিপূর্নভাবে পায়ে হেঁটে সেখানে জড়ো হবেন। সেখানে একটি মেলা হবার কথা, কেউ কেউ বলছে মেলা হলেও তি নাই। সেখানে সবাই জড়ো হবেন এবং সেখানে জড়ো হয়ে কোন শ্লোগান দরকার নাই। কোন বক্তৃতার দরকার নাই, ঠিক ৫.৩০ মিনিটে সবাই শুধু মুষ্টিবদ্ধ একটি হাত দুই তিন সেকেন্ডের জন্য একসাথে উপরে তুলবেন। আমার লোকেরা থাকবে বিভিন্ন জায়গায়। তারা ছবি তুলবে লাইভ ভিডিও করবে। আমি যদি দেখি জনগনের শতস্ফুর্ত সমর্থন আছে তাহলে সেদিন যেহেতু ঐদিন শুধু আমার  পরীক্ষা আমার মানুষদের কাছে পরীক্ষা, মানুষরা এই জালিমদের কাছ থেকে মুক্তি চায় কিনা। যদি সবাই ভয়ে থাকেন যদি সবাই এই অসহযোগ  আন্দোলনের সূত্রপাতটি করতে না পারেন তাহলে আমি কি করবো একাকী, আমাকে সাহস দিতে হবে, সমর্থন দিতে হবে, আর সমর্থনটা বলছি না আপনারা এখনই লড়াই করুন। আমি বলছি সমর্থন জালিমদের বিরুদ্ধে আছে কিনা, এটা আগে জানতে হবে। না জেনে আমি যদি কতগুলো বেঈমানকে নিয়ে মাঠে নেমে যাই তাহলেতো ভরা ডুবি হবেই। কিন্তু প্রকৃত দেশ প্রেমিক প্রকৃত অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা সতস্ফুর্ত তাদেরকে নিয়েই আমার মাঠে নামতে হবে। সেজন্য এটা শুধু একটা পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় ওই মাঠে জায়গা না হলে রাস্তায় রাস্তায়। সমগ্র ফেনী শহরে ঠিক ৫.৩০ মিনিটে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত যদি উঠে তাহলে মনে করবেন, আমি মৃত্যুকে আর ভয় করবো না। মৃত্যুর দিন ঘনিয়ে এসেছে, বয়স হয়ে গেছে, অসুস্থ হয়ে পড়েছি চলবে। সুতরাং এর পরেই আমি আসা করি ২৬শে মার্চ এর পরেই আমি



বাঁকি অংশ পড়তে ক্লিক করুন


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি