শুক্রবার, ২৯ মার্চ, 2০২4
ফেসবুক লাইভে হাজারীর ভাষণ (২৪ মার্চ ২০১৭)
হাজারিকা ডেস্ক॥
Published : Monday, 27 March, 2017 at 9:42 PM, Update: 26.04.2017 9:44:49 PM

বন্ধুগণ আসসালামু আলাইকুম। আজকে ২৪শে মার্চ। আর মাত্র একদিন পরেই ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। সেই স্বাধীনতা দিবসের প্রাককালে বিশেষ কারণে আমাকে আবার লাইভ ভাষণে আসতে হয়েছে। আমি প্রথমেই স্বাধীনতার জন্যে যারা শহীদ হয়েছেন, স্বাধীনতার জন্যে যারা যুদ্ধ করেছিলেন, তাদের সকলকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। একই সঙ্গে আমি একটু স্মরণ করতে চাই গত সপ্তাহে আমার এক চাচাতে ভাই মোস্তফা হাজারী মারা গেছেন। দূরভাগ্য দীর্ঘদিন ধরে অনেক আমার বংশের পরিবারের লোক মারা যাচ্ছে কিন্তু জানাযাটাও পড়তে যেতে পাড়ছিনা। এটা কি রকম দুঃখ যারা যেতে পারেনা তারা বুঝে। সেটা আমি আল্লাহর উপরে ছেড়ে দিব। আল্লাহতালা যখন যে পরিস্থিতি করে সেটাকে মেনে নেয়া উচিত। মেনে নিয়েছি। যাক তাদেরও আমি আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

আজকে আমি গুরুত্বহীন দুএকটা ভাল খবর বা খুশির খবর দিয়ে শুরু করব। একটা হচ্ছে, আমি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম একরাম হত্যার ব্যাপারে খানিকটা। কারণ আমি কিছু কিছু ঘটনা জানি। ঘটনার মধ্যে একটা হচ্ছে, কেউ সাক্ষ্যি দিবে না। যেসব আলামত ছিল প্রমাণের জন্যে সে সব ধ্বংস করা হয়েছে এবং একটা সময়ে এপিলিট ডিভিশন থেকে বলা হয়েছে, আরও দেড় বছরেরও ওপরে। সময়ের আগে যে ছয় মাসের মধ্যে এটা নিস্পত্তি করতে হবে। কিন্তু দেড় বছর পর্যন্ত যখন নিস্পত্তি হলো না তখন বুঝলাম পরিস্থিতি ভাল না। কিন্তু গত সপ্তাহে এপিলিট ডিভিশন আবার ছয় মাস দিয়ে বলে দিয়েছে যে এটা ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। এবারে বাধ্যবাদকতাও আছে এবং এপিলিট ডিভিশন থেকে বোধহয় কিছু কথাবার্তা হয়েছে। তাতে বোঝা গেছে, এবারে ছয় মাসের মধ্যেই সমাধান হবে। আর সুবিধাটা হলো এই ছয় মাসের মধ্যে একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যাতে সাক্ষ্যি কি হবে না হবে ,আলামত কি আছে না আছে, জানি না তবে কোর্টে ফেনী জজ কোর্টের পরিবর্তন হয়েছে। তাতে পরিষ্কার ফেনী জজ কোর্টের আইনজীবিরা বলেছেন, এটাকে আগের মতন কোনো রকমেই গোজামিল দিয়ে পারকরা যাবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস একরাম হত্যার মত চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিরা খালাস পাবে না। এটা অন্যদের কথা জানি না, নিশ্চয়ই একরামের আত্মীয়দের জন্য সুখবর। কিন্তু একরামের ভাইও তো সাহস করে সাক্ষ্যি দিতে ভালোকরে রাজি নাই, তার বউও রাজি নাই। কিন্তু আমি বলছি। কারণ আমাকে আপনারা বিশ্বাস করবেন এই জন্যে আমি এর আগে আমাদের সাখাওয়াতের মামলার ব্যাপারে যখন যেটা ভবিষ্যত বলেছিলাম সেটাই কার্যকর হয়েছে লেগেছে শেষ পর্যন্ত। সুতরাং এ ব্যাপারেও আমি বলছি একরাম হত্যাকারীরা যারা ইতিমধ্যে আসামি হয়েছে। তারা পার পাবে না। তাদের মূল আসামিরা একে বারেই পারপাবে না। তাদের চূড়ান্ত শাস্তি হবে। আরেকটা আমি আজকেই যখন ভাষণ দিব । আজকেই একটা সুখবর সৃষ্টি হলো বলে মনে করি। আমি যখন হতাশ খানিকটা বালিগাঁওয়ের জয়নাল মেম্বারের খুনের ব্যাপারে তার খুনিরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না, খুনিদের ধরার চেষ্টা হচ্ছে না। পুলিশ মামলা নিচ্ছিল না, ঠিক সেই কিন্তু সময় জয়নাল হত্যার প্রধান আসামি কামাল মেম্বারকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এজন্যে কামাল মেম্বারের যারা অনুসারি তারা আবার কিছু বোমাবাজি বা দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করেছিল। শেষ পর্যন্ত এটা মনে হয় বেশি দূর আগায় নায়। এট সুখবরই আমি বলব। তার এ মামলায় কি হবে না হবে তা আমি এই মূহুর্তে কিছু বলতে পারছিনা। তবে এই যে মূল আসামিটাকে ধরেছে, এখন কিন্তু ইচ্ছা করলে পুলিশ সব কিছু বের করতে পারে। এখন পুলিশ ইচ্ছা করবে কি করবে না আমি অবশ্য এই মূহুর্তে সেটা বলতে পারব না।

আমি মূলত আজকে বেশি কথা বলতে চাইছিনা। একটা কথা বলি আমি আমার গত ভাষণে জনমত যাচাইয়ের একটা প্রোগ্রাম দিয়েছিলাম। বলেছিলাম যে ফেনীর জনগণ জালিম থেকে মুক্তি চায় কিনা। যেমন আমরা স্বাধীনতা চাই কিনা আমাদের সত্তরের নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছিল। স্বাধীনতা চায় প্রমাণ হবার পরেই বঙ্গবন্ধু ডাক দিয়েছিলেন ৭ই মার্চে। সেদিন কিন্তু তিনি বলেছিলেন তোমাদের যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু কেউ আমরা কখনোই এটা উল্লেখ করিনা, যে বঙ্গবন্ধুর সেই আহবানে আমরা পুরোপুরি সাড়া দিতে পারি নাই। কারণ যখন পাকসেনারা হামলা করল চূড়ান্তভাবে আমরা আমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে আমরা মুকাবিলা করতে পারিনাই। তবে ঢাকায় পিলখানায় ও পুলিশ লাইনে মোকাবিলা হয়েছিল। কিন্তু সাড়া বাংলাদেশে আমরা মুকাবিলা করি নাই। তার নির্দেশ আমরা পালন করি নাই। করি নাই অপরাধও করি নাই। কেননা ওই সময় ট্যাংকের সামনে লাটি সোটা খোন্তা-কুঠার দা নিয়ে মোকাবিলা করলে মরা ছাড়া আত্মহত্যা ছাড়া উপায় ছিল না। ফলে তার কথা মান্য না করে আমরা পালিয়ে গিয়ে ছিলাম আশ্রয় নিয়েছি,আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি, আমরা ট্রেনিং নিয়েছি, অস্ত্র হাতে তুলেছি এবং ভারতের সহযোগিতায় পাল্টা আক্রমণ করেছি স্বাধীনতা পেয়েছি। সুতরাং আজও আমার সেই প্রোগ্রাম সম্পর্কে বলব যখন যেটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। আপনারা নিজ গুণে,নিজ বুদ্ধিতে ,নিজের পরিকল্পনায় কাজ করবেন। আমি বলি না আপনারা, অনাহত বিনা কারণে কোথাও জান দেন। আমি বলি না আপনারা , আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে লড়াই বাধিয়ে দিয়ে আহত হন । যখন যেখানে যেই মূহুর্তে যেটা প্রয়োজন হবে, আপনারা সেটা করবেন। ইতিমধ্যে আমি এটাও আলাপ করব না, কারা কি বলেছে। ইতিমধ্যে আমার এই প্রোগ্রাম নিয়ে আমাদের মধ্যেই বিভিন্ন রকমের মতবেদ দেখা দিয়েছিল। বিভিন্ন রকমের আলাপ-আলোচনা হয়েছিল। তাদেরকে আমি উত্তর ও দিয়েছি। তাদেরকে আমি বলেছি, যে কমপক্ষে দশটা বছর তো বসেছিলাম। কি পেয়েছি? বসে থাকলে পাওয়ার সুযোগ নাই। এবার আমরা একটু নড়াচড়া করে দেখিনা। পেতেও পারি , না পাইলে তো নাই। এমনেও পাই না, ওমনেও পাই না। তবে একটা ইতিহাস আছে। ইতিহাস বলে আমরা যখন এগিয়ে গেছি, ওরা কিন্তু পিছিয়ে গেছে। যেমন আমি যখন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচনে দাঁড়ালাম ১২ সালে। তখন সবাই বলেছিল, আমরা ভোটের আগের দিন একটা মিটিংয়ে বসেছিলাম। সেখানেও আমার অনুসারিরা বলেছিল না, এখানে গেলে আপনি বেজ্জতি হবেন সমস্যা হবে দরকার নাই। কিন্তু আমি ডিটারমাইন্ড ছিলাম। আমি বলেছিলাম যা হবার হবে। সেই নির্বাচনে তারা চেষ্টা করলেও ৪০০ ভোটের মধ্যে ৩০০ ভোট আমি পেয়েছিলাম। তারা চেষ্টা করেও কিছু করতে পারে নায়। আমি জিতে ছিলাম। এর পরে আরেক বার আমার সেই ঐতিহ্যবাহী মেলাটা আমি আত্মগোপণ থেকে বেরিয়ে মেলা করতে চাইলাম। ওদের মধ্যে যুদ্ধেমদেহীভাব করতেই দিবে না। অপরাধটা কি দোষটা কি? সমস্যাটা কি? এটা কোনো নির্বাচনও না, আন্দোলনও না। এটা একটা ইতিহাস ঐতিহ্য হয়েছে। আবার এটা করব। যাক আমি আবার নেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। নেত্রীও কিছু সহযোগিতা করল। তখন আমি সন্ধ্যার সময় আমি একটা মিটিং করলাম। আজকে আমারতো একটা বদঅভ্যাস নাম বলে ফেলি। না নাম বলব না। দুএকজন কঠোরভাবে বিরোধীতা করল। বলল দরকারটা কি, মেলা না করলে আপনার সমস্যা কোথায়। আপনি বাদ দেন না , কি দরকার। শুধু শুধু তাদের সঙ্গে ঝামেলায় যাওয়ায়। আমি বললাম দেখি তাদের সঙ্গে একটা ঝামেলা যেয়ে। সেদিন মেলা করতে এগিয়ে গেলাম এবং মেলা করেছিলাম। দেখা যায়, আমরা তাদেরকে ছাড় দিয়ে দিয়ে পিছিয়ে পড়েছি। আসলে যদি আগে থেকে তাদের অন্যায় কাজে অন্যায় আপদারের ছাড় না দিয়ে মরলে মরতাম বোধ হয় তারা এতোটা আগাতে পারতো না। ভুল হয়ে গেছে। ভুল আর করতে চাই না। মরলে এমনে বাসের তলে পড়ে লাভ কি? ট্রেনের তলে পড়ে লাভ কি?

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মরে লাভ কি? মরলে একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে মরব। সেই মরনটা হলো মহীয়ান। সেজন্যে এখন কিছু কিছু সিদ্ধান্ত আমরা পাল্টিয়েছি। লড়াইটা শুরু করব। শুরু করার আগে মানুষের সমর্থন আছে কিনা। মানুষ চায় কিনা সেটা চূড়ান্ত ভাবে জানতে হবে। সেজন্য কোনে আন্দোলন নয়, কিছু না শুধু জানতে চেয়েছিলাম। মানুষ সমর্থ করে কিনা । জালিম মুক্তি চায় কিনা। এই জন্যে শুধু পাঁচটায় সাড়ে পাঁচটায় ওয়াপদা মাঠে মানুষ জড়ো হয়ে হাত তুলবে এক সেকেন্ড দুই সেকেন্ডের জন্যে তুলবে। এটায় যদি দেখি মানুষ সফল করেছে। তাহলে আমরা নামবো বলেছি আগেও। সেটাতেই আমাদের প্রতিপক্ষের মাথা খারাপ হয়ে গেল। বিষয়টা ঘোষণায় বার বার আমি উল্লেখ করেছি। এখানে কোনো রকমের বিশৃঙ্খাল হওয়ার সুযোগ নাই। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে এই অনুষ্ঠান পালিত হবে। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাথা খারাপ হয়ে তার পরের দিনই বলতে লাগল ওবায়দুল কাদের ফেনীতে আসবে ২৮ তারিখ। ওবায়দুল কাদের আসবে ৮-১০ বার বলছে তারা। বার বার বলে ওবায়দুল কাদের আসবে। এটা মনে করল ওবায়দুল কাদের ২৮ তারিখ আসবে তোমাদের তো ২৬ তারিখ ছিল। অর্থাৎ ওরা বোঝাতে চাইছে ২৮ তারিখের এই অনুষ্ঠানটা গুরুত্বপূর্ণ এতো বেশি কার্যক্রম যে এর আগে কেউ কোনো কিছু করতে পারবে না। যাক পরবর্তীকালে ওবায়দুল কাদের নিজের মুখেই বলেদিয়েছে ও সব কথা আমার কাছে না আলাপ করে বলবে না। এমনকি একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা ও বলেছে। সেটা এই মুহুর্তে আমি বলতে চাই না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের মধ্যে যেটা বলছিলাম। অনেকেই বলছে কার নেতৃত্বে আসবে। কার নেতৃত্বে যাবে। কার নির্দেশনা মানবে।  আমি বলেছি এটা কোনো নেতার অনুষ্ঠান নয়, এটা কোনো নেতৃত্বের অনুষ্ঠান নয়। এটার প্রত্যেকেই নেতা। প্রত্যেকেই যে যার প্রহরী। আমরা নিজেরাই প্রহরী , নেতাদের কি দরকার। কি দরকার কোনো একজনার নির্দেশনার । বলা হয়েছে আসবেন একা একা আসুন। গাড়ি গোড়ারও দরকার নাই। একা একা এসে সময়টা যখন হচ্ছে হাতটা জাগিয়ে যান এটাতে একটা বিপ্লব ও হয়ে যেতে পারে। সেই জন্য এই সব নেতারা যারা ভয় পাচ্ছিল। ওরে বাবা  দুয়েকজন নেতা মনে হচ্ছিল মরেই যাবে ভয়ে। কারণ এই অনুষ্ঠান করতে গেলে তাদের ওপর না আবার দোষ আসে। তারা মারা এমনেই গেছে। রাজনৈতিকভাবে তাদের মৃত্যু হয়ে গেছে। তাদেরকে আর কেউ তুলে আনতে পারবেন। দেখেন আমরা ভয়ে ভয়ে থাকতে থাকতে আতঙ্কিত হতে হতে বছরের পর বছর পাথর হয়ে গেছি। এখন যদি কোনো একজন লোক যদি তার মেয়েটাকে নিয়ে কোথাও যাচ্ছে প্রকাশ্যে দিবালকে রাজ পথে তার হাত থেকে টেনে নিয়ে মেয়েটাকে ধর্ষণ করার জন্য সন্ত্রাসীরা নিয়ে চলে যায় । যদিও মেয়ের  বাপ কিছুটা হৈচৈ করবে বাইরের লোকগুলো কিছু করে না। তাকিয়ে থাকে। এই যে একটা কবরের শান্তি, এই যে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। আপনার হাত থেকে টাকার ব্যাগটা ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আপনার মেয়েটাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করছে না। কেউ বাধা দিচ্ছে না। চোর ঢুকেছে ঘরে,চোরকে চিনতে পারছে, চোরকে দেখছে, চোরকে চোর বলে চিৎকার করতে পারছে না। এখন হাজার বছরের কবরস্থান মোহাম্মদ আলী বাজারে। শত শত বছর আগে থেকে এখানে কবরস্থান।

  ঈদের পরে ঈদের নামায শেষে হাজার হাজার লোক চতুরর্দিক থেকে এসে এখানে মোনাজাত করে এখানে মুরব্বীদের জন্য। সেই কবলস্থান ইউনিভার্সিটির নামে বুলডোজার লাগিয়ে উল্টে দিচ্ছে, কেউ কোনো কথা বলছে না। কোনো প্রতিবাদ করছে না। আশ্চর্য লাগে। আমি বলি মরণতো একদিন আছেই। সকল অন্যায়টাকে চোখ ও মুখ বুজে  সইতে হবে এমনতো নয়। আমি যারা ইউনিভার্সিটি করছে তাদেরকে বলি ঠিক আছে। সুন্দর আমিও সমর্থন করব। আমিও সহযোগিতা করব। কিন্তু মানুষের সঙ্গে কথা বলে মানুষের একটা সেন্টিমেন্ট আছে। তাদের মুরব্বি, তাদের বাপ দাদার কবর আছে ওটাকে এভাবে তুলে তাদের সামনে হাড্ডি-গুড্ডিগুলো দেখা তাদেরতো অন্তরে আঘাত লাগে। সুতরাং মানুষের বরদোয়া যেখানে, সেখানে কিছু সফল হয় না। তাদের সঙ্গে কথা বল, টাকা পয়সা দরকার হলে দাও। এবং আমি বলি, কবরস্থানও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেয়া যায়। আমাদের আগেকার আমলের অনেক পীর পয়গম্ভরদের কবরস্থান্তরিত হয়েছে। এটা কোনো অবস্থাতে বাধা নাই। সুতরাং কবরস্থান সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে বিভিন্নভাবে করা যায়। আমার ক্ষমতা আছে, আমি ইচ্ছা করলে আঙ্গুল দেখিয়ে এটা করতে পারি। এই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য তো সব সময় থাকে না, থাকবে  না। এটাকে আমি নিন্দা করি। তবে ইউনিভার্সিটি করার খুবই সমর্থক এটার পক্ষে। এখন পরীক্ষাটা করার ব্যাপারে শুধু  আজকে হয়তো ভাষণই দরকার হতো না। একটু দরকার হয়েছে অন্য কারণে। যারা আমার এটাকে গ্রহণ করতে পারেন নাই। ভয় পেয়ে গেছেন। তাদের আমি শুধু বলি। সফল তো আমি হয়েই গেলাম। মানুষ আসার আগেই আমি সফলতা পেয়েগেছি। কারণ হলো জালিম বিরোধী একটা প্রোগ্রাম হবে, নিজাম বিরোধী একটা প্রোগ্রাম হবে। এটা কি ফেনীর ১৫ লক্ষ মানুষের ঘরে ঘরে যায় নাই। এই যে সমস্ত জেলাটা নড়ে উঠল, এটাইতো আমার সফলতা। এতো আমি মানুষের মুখ খুলে দিলাম। মানুষ বলছে হে , এটা সফল হবে, এটা হবে না, এখানে মারবে, এখানে কাটবে, এটা এ্যামনে হবে এই যে আলোচনা। কিসের জন্যে এটা। জনমত যাচাই, মানুষ জালিম মুক্ত চায় কিনা। এই যে মুখ খোলা। জালিম কারা সেই জালিমদের কথা মুখে আনতেই পারতো না এতো দিন। এখন মুখে এসেছে। মানুষের ঘরে ঘরে আলোচনা হয়েছে। এটা আমার মাথাটাকে উচু করে দিয়েছে। কেননা এটাকে আমি কিন্তু বিশাল সফলতা মনে করি। এরপরে কিছু হবে না হবে পরের কথা। পরেও হবে, এ্যামনে যাবে না। কিন্তু যেটা ইতিমধ্যে ঘোষণার পরে পেয়ে গেলাম। সেটা হচ্ছে, সারা বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে যেখানে যেখানে ফেনীবাসী আছে তাদের সকলের মধ্যে এটা আলোচিত। এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা। কেউ খুশি। দু-একজন বেজার আছে। এটা আমি চেয়েছিলাম। এটা হয়েছে।

এবার আপনারা কল্পনা করতে পারবে না । বিদেশ থেকে কি আকারে লোক এই অনুষ্ঠানে আসতে চায়। এটাকে সফল করতে চায়। বিশ্বাস করুন আমি কাউকে কিন্তু আসার জন্য উৎসাহিত করি নাই। কেননা এতো কষ্ট করে বিদেশ থেকে আসবে। কেউ কেউ বলেছে এসেই গেছে, কি করবে তারা জানে। আমি কাউকে আসতে বলি নাই। আরেকটা কথাও বলে দিই। এই অনুষ্ঠানে কেউ আসুক বা নাই আসুক কিছু করুক বা না করুক। কাউকে আমি একজন লোককেও বলি নাই। আমি আমার ভাষণেই বলে দিয়েছি। যেমন বঙ্গবন্ধু বলে দিয়েছিলেন ৭ই মার্চে এরপর তিনি আর কিছু বলতে পারেন নাই। আমি বলেদিয়েছি সেদিন যেভাবে যা বলার, এরপরে আমি আর বলার প্রয়োজন মনে করি নাই। আমি কাউকে এটার নেতৃত্ব দিতেও রাজি নই। তবে দুয়েক জনের ভূমিকা ভাল ছিল। কিছু কিছু লোকের ভূমিকা খারাপ ছিল। সাধারণ কর্মীরা অনেকে প্রশ্ন করেছে এখানে যাব কি যাব না ইত্যাদি। দুয়েকজন আছে যারা উৎসাহিত করেছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই। আজকে চিহিৃত করে আর নাম বলব না। এবং তাদের নিন্দা করি। যারা তাদের নিরুতসাহিত করেছে। আওয়ামী লীগের নাম আমার নাম ভাঙ্গিয়ে যারা নেতা হয়েছে। তাদের অনেকে নিরুতসাহিত করেছে। আমি তাদের নিন্দা জানাবোই। সেজন্য বলি যে এটা সফল হয়েছে। কেউ কেউ আবার আইনগত প্রশ্নও তুলেছেন। বলেছেন যে এটা বেয়াইনি। জনমত যাচাই আমাদের সংবিধান স্বীকৃত বিষয়। সংবিধানেই বলা আছে। আমাদের সংসদে প্রায়ই মাঝে মধ্যে আলোচনা হয়। যে স্যার এটা জনমত যাচাইয়ের জন্য দেন। কখনো খুব একটা দেয় নাই। কিন্তু বিধানে আছে। জনমত যাচাই করা যায়। সেটা ভিন্ন পদ্ধতিতে। আমারটা অন্য পদ্ধতিতে। আমি যতই বলছি। এটা শান্তিপূর্ণ কেহই এটা মানতেই চাই ছেনা। কারণ ওরা জানে যে শান্তিপূর্ণ হোক না হোক তাদের বিরুদ্ধে একটা বিষ্ফোরণ ঘটে যাবার সম্ভাবণা। কারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়েও গেছে। কতজন যে কত ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। খুন-খারাপি হয়েছে, মামলা-মোকরদমা হয়েছে। চুরি ডাকাতি হয়েছে। জবর দখল হয়েছে। সরকারীভাবে এই বালু উত্তোলন বাদ দেন। আর জাসফোর্স সেক্টরে চাঁদাবাজি বাদ দেন। মানুষের জমি-জমা বেচাকেনা ব্যাপারে যে কি লুটপাট করেছে কল্পনাই করতে পারবে না। আমার জমি দশ লাখ টাকা আমি বিক্রি করব। আবার ও চাঁদাবাজদের ও আবার দশ লাখ টাকা দিতে হবে। যে কিনল দশ লাখ টাকা দিয়ে তাকে আবার আরও দশ লাখ টাকা ওই চাঁদাবাজদের দিতে হবে। এবং এটা দিতে হয়েছে। নাম বলব না একজনকে কিছুদিন আগে শুনতেছি ত্রিশ কোটি টাকা দিতে হয়েছে। এই সব টাকাইতো খরচ করা হয়েছে মামলার জন্যে। আর সেই মামলাটা আমি বলেছিলাম ছয় মাস অপেক্ষা করেন। প্রায় চার মাস গেছে।

আর দুই মাস আমি যেটা আশা করেছিলাম তার চাইতেও একটা সুখবর আমার কাছে আছে। পরিষ্কারভাবে আগামী দুই মাসের মধ্যে এই মামলা আবার আগের মতো তুঙ্গে উঠবে। আবার চাঞ্চল্য দেখা দিবে। আবার পরিস্থিতি খুবই উত্তেজিত হবে। এ ব্যাপারে আমি আশাবাদি। আমি কখনো ওই মামলার ব্যাপারে বিভ্রন্ত করি নাই। অনেকেই অসন্তুষ্ট হয়েছে। কিন্তু আমি বিভ্রান্ত করি নাই। আমি যেটা সত্য সেটা বলেছি। বলছিলাম যেটা মূলত আমি আজকে বক্তৃতা দিতাম না। দিচ্ছি এই জন্যে একটা পরিবর্তন আছে আমার প্রোগ্রামের। সেটা জানান না দিলেতো বড় ধরনের বিভ্রান্ত দেখা দিবে। এবং সেটার ভাল-মন্দ দিক নিয়েও একটু আলোচনা করতে চাই। সেটা হচ্ছে আমি মূলত দুটো প্রোগ্রাম দুটো এনাউন্সমেন্ট করব। একটা হচ্ছে আমি স্থানটা পরিবর্তন করেছি। কেননা ওরা বলেছে যে এখানে মেলা হচ্ছে আগে থেকে। আপনি কি মেলা ভঙ্গ করে দিয়ে লোক জমা করবেন কিনা । আমি বলছি জনমতের উপরে মানুষের মনভবের চাইতে বড় কিছু তো না। আচ্ছা ঠিক আছে থাক। তুমি মেলাই করো এখানে, আপত্তি নাই। কি মেলা হচ্ছে সবাই জানে। কারা যাচ্ছে না যাচ্ছে সবাই জানে। তবুও মেলাই হোক। দরকার নাই ওখানে আমার লোকজন যাওয়ার। আমি এটাকে স্থানান্তরিত করে আমার নামে নাম অনেক কষ্ট করে করেছি মানুষ উপকার পাচ্ছে। জায়গা-জমি বিক্রি করেও উপকার হয়েছে মানুষের। পাঁচ হাজার টাকার জমির দাম হয়েছে পঁচিশ লাখ টাকা আর যানজটের হাত থেকে পাঁচগাছিয়া রোড দিয়ে যাওয়া-আসার জন্যে মুক্তি পেয়ে ডিসি অফিসে দাগনভূঁইয়া অঞ্চলের লোক সহজে আসে যায়। ডিসি সাহেবরাও এটা নিয়ে যায় আসে। এটার অনেক কাহিনী আছে থাক। আমার নামে নাম হাজারী রোডে এটাকে আমি স্থানান্তরিত করেছি। এখন আমার হাত তোলার অনুষ্ঠানটার সব ঠিকঠাক আছে। শুধু ওয়াবদা মাঠ থেকে এটা স্থান্তরিত হয়ে হাজারী রোডে হবে। আপনারা যারা আগ্রহী তারা হাজারী রোডের দুপাশে অবস্থান নিবেন। একটা হচ্ছে হাজারী রোড হচ্ছে ফেনীর পুলিশ লাইন থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত এই এলাকাটা এক কিলোমিটারের মতো এখানে হাজারী রোড এই হাজারী রোডে যদি কোনো বাধা আসে তাহলে উম্মুক্ত বিশ্বরোড তো আপনাদের জন্য তো রইলোই। হাজারী রোডের পশ্চিম প্রান্ত থেকে পুরো বিশ্বরোড টাইতো আপনাদের। ওখানে কোনো কিছু করা যায় না। ওই জন্য পুলিশ লাইন থেকে বিশ্ব রোড পর্যন্ত বিশেষ করে ডিসি অফিসের গেট থেকে বিশ্বরোডের সীমান্ত পর্যন্ত এবং বিশ্বরোডেও যদি যানজট বা কোনো কিছু হয় আমি আশাকরি হাজারী রোডের দুপাশে আপনারা গাড়ি-ঘোড়া চলতে চায় বাধা দেবার দরকার নাই। তবে এক মিনিটের জন্যে একটু  থামিয়ে রাখলে ক্ষতি নাই। আমি বলি কেউ যেন বলতে না পারে। ওরা তো এমনো করেছে একটা মিটিংয়ের জন্যে একবার মঞ্চ করতে ট্রাংক রোডে তিন দিন বন্ধ রাস্তা ,মঞ্চ খুলতে তিন দিন বন্ধ ট্রাংক রোডের রাস্তা। মিটিং করছে একদিন মোট পাঁচদিন বন্ধ করে রেখেছিল। আমি কোনো রাস্তা পাঁচ মিনিটও বন্ধ রাখতে পক্ষপাতী নই। সেই জন্যে হাজারী রোডের দুই পাশে অর্থাৎ উত্তর পূর্ব অঞ্চলের লোকেরা থাকবেন উত্তর দিকে দণি অঞ্চলের লোকেরা থাকবেন দক্ষিণ অঞ্চলে । যারা পারেন আসবেন। আমি কাউকে বলছিনা যে আপনার আসেন যে এই হবে, সেই হবে। নিজের বিবেচনায় যদি মনে করেন যে দরকার আছে, প্রতিবাদ করার দরকার আছে।  প্রতিবাদতো আমি যুদ্ধ করতে বলছিনা। প্রতিবাদ করে জানান আপনাদের ওপর দিনকে দিন দশটা বছর কবরে মানুষ মরে গিয়ে যেভাবে মানুষ নিরব ছিল। সেভাবে ছিলাম। সেভাবে থাকতে গিয়েই আজকে তারা এসব করছে। এখন কত কথা । এসব কথা এখন আর বলতে চাই না। তারা বলছে, আবাররো নমিনেশন পাবে।

আবারও এটা হবে সেটা হবে। পেয়েই যাক যেতে পারে যদি আমরা নিরব থাকি । না ওই সুযোগ আল্লাহর রহমতে আর দিব না। প্রস্তুত থাকেন। মরতে রাজি আছি আপনাদের সঙ্গে। কেননা এমনেতেই বয়স হয়েছে বার বার বলেছি। তার মধ্যে সেই মরাতে গৌরব। যেই মরা প্রতিবাদ করে, কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করে মরা। আমরা সেটা মরতে চাই। যাই হোক আমাদের কেউ কেউ বলছে, যদি বড় ধরনের কোনো গোলযোগের সৃষ্টি করে দরকার হলে এটা হবে না। কিন্তু দরকার হলে আমি সেই মূহুর্তে তাৎক্ষণিকভাবে হরতালের আহ্বান করব। আর বসে থাকার সময় নাই। হরতালের আহ্বান করব, মাঠে এস নেমে যাব আন্দোলনে। আন্দোলনটা করতে চাই না। আমি যদি গরম করে দেই ফেনীকে সারা বাংলাদেশে হয়তো একটু গরম হয়ে যাবে। যেটা চাই নাই একদিকে দেখেন জঙ্গিরা হঠাৎ এতো  কিছু করছে এতো মরা মরছে তার পরও নিমূল হচ্ছে না। জঙ্গিরা কিন্তু যুকির মধ্যে রেখেছে আমাদের এটা মনে রাখবেন। ওদেরকে যারা পাত্তা দিচ্ছেন না, তাদেরকে তোয়াক্কা করছেন না। আমি বলি তারা ভুল করছেন। ওদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে। ওরা যেকোনো সময়ে বড় ধরনের ঘটনা করতে পারে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবাইকে এটা হুঁশিয়ার থাকতে হবে। এজন্যে আমি কিন্তু আমার উপরে অনাহত কিছু একটা চাপিয়ে দিলে আমি আর বসে থাকবো না। সেজন্যে আমি যে ঘোষণাটা দিলাম সেই ঘোষণার ব্যাপারেই মূলত গুরুত্ব দেন। আপনারা এখন সব জায়গা থেকে আসতে আরও সুবিধা হলে বেশি লোক কোনো বিশৃঙ্খলার আর কোনো সুযোগ রইল না। এখানে দুই-চার লাখ লোক একত্রি হলেও বিশৃঙ্খলার সুযোগ নাই। কারণ সব লোক যদি হাই রোডের দু পাশে রাস্তা বন্ধ না করেও দাঁড়িয়ে যায় তাহলে কয়েক লক্ষ লোকের জায়গা হবে। আমি মনে করি ওখানে মেলার কথা বলে এটা বলে সেটা বলে আমাদের এটাকে বাঞ্চাল করতে চাইলে চাওয়াতে বরং আমাদের এটায় মানুষের সমাগম আরেকটু বেশি হয়ে যাবে। আমি বলছিলাম প্রত্যেকেই আমরা নেতা। সেজন্য শেষ কথা হচ্ছে

বেজে উঠল কি সময়ের ঘড়ি?
এসো তবে আজ বিদ্রোহ করি,
আমরা সবাই যে যার প্রহরী
উঠুক ডাক।
উঠুক তুফান মাটিতে পাহাড়ে
জ্বলুক আগুন গরীবের হাড়ে

জয় বাংলা
খোদা হাফেজ



সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি