শিরোনাম: |
হাজারীর আত্মজীবনী (পর্ব-১১১)
|
বোন খোদেজার অবস্থার উন্নতি, এখন তার ছেলেমেয়ে জাপানে
বোন খোদেজার অবস্থা সকলের চেয়ে ভাল। তার কয়েক ছেলে এবং মেয়ে জাপান থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আয় করে তাকে দিয়েছে। শুনেছি স্বামী বেঁচে থাকতে খোদেজার কোনো কোনো সময় দুবেলা খাবার জুটত না। এখন সে সবচাইতে ভালো আছে। হঠাৎ করে টাকার দরকার হলে সবাই ওর কাছে দৌঁড়ে যায়। স্বর্ণ ব্যবসায়ী কামালও ভালো করেছে। খোদেজার স্বামী দেলোয়ার মিঞার মতো সহজ সরল ও সৎ লোক আমি জীবনে দেখিনি। লোকটি কারও সাথে কটু কথা বলেনি, কোনো প্রকার লোভ-লালসা ছিল না। চাকরি জীবনে বেশির ভাগ সময় করাচিতেই কাটিয়েছে। খোদেজার বড় মেয়ে বেবীর বিয়ে হয়েছিল চৌমহনী অঞ্চলের তসলিমের সঙ্গে , তসলিম ফেনী টেকনিক্যালের ছাত্র ছিল। ছাত্রজীবনের শেষ দিকে তসলিমের সঙ্গে বেবীর বিয়ে হয়। পরে তসলিম জাপান চলে যায় এবং তারপরে বেবীকেও নিয়ে যায়। ওরা কঠোর পরিশ্রম করে ভালো টাকা আয় করে। বেবী নিজেই টোকিওতে হালাল খাবারের রেস্টুরেন্ট চালাতো, খোদেজার ছেলেমেয়েরা এক পরিবারেই রয়ে গেছে। তসলিম জাপানেও শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলেছিল। জাপানের বাঙালিরা সবাই তাকে এক নামে চেনে। তার বড় মেয়ে তুকিনা ইউকি, ছেলে বাবন টোকিওতে লেখাপড়া করে , ওরা এখন জাপানের নাগরিক। আব্বার সম্পত্তি আমার ভাগে যা পড়েছে তার পরিমাণ বর্তমানে টাকার অঙ্কে প্রায় ৭-৮ কোটি হবে, ট্রাঙ্ক রোডে মক্কা সুইট-এর ঘরটি আমার। এর বর্তমান টাকার মূল্য কোটি টাকার উপরে। পেট্রোবাংলা এলাকায় ৫০ ডিসিমেলের একখণ্ড জমি রয়েছে। সেই এলাকায় এখন জমির মূল্য ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। সেই হিসেবে ওই জমির মূল্য দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা। ৫ গজ দূরে খালের ওপারে রয়েছে সমপরিমাণ জমি, তার মূল্যও ২ কোটি টাকা। আমার বাসভবন ও মুজিব উদ্যান নিয়ে রয়েছে ৭০ ডিসিমেল, ৩০ ডিসিমেলের ঘরসহ একটি জায়গা আছে। কমলাপট্টিতে গণি মার্কের্টের দোতলা আমার ভাগেই রয়েছে। তবে এটি আমার মৃত্যুরপরে পাগলা মিঞার মাজার মসজিদ পেয়ে যাবে। ওটা রেজিস্ট্রি করে দিয়েছি। মোটকথা খালি হাতে আসিনি, কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তিও বাড়াতে পারিনি বরং কমিয়েছি। নুরুল হককে ভাড়া দেয়া ঘরটি বিক্রি করে দিয়েছি। ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকে ঝোঁক ছিল না। আমার হাইলাক্স পিজ গাড়িটি গোলাম কাদের এবং এমপি হিসেবে পাওয়া ডিউটি ফ্রি টয়োটা গাড়িটি খায়ের ভুঁইয়া কিনে দিয়েছিল। এদের কোনো কাজই আমাকে করে দিতে হয়নি। কেবল কাদের তার ভাইয়ের ম্যানপাওয়ার ব্যবসায় লাইসেন্স নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে বিষয়টি মন্ত্রী মান্নান সাহেবের মাধ্যমে সুরাহা করে দিয়েছিলাম। এই পর্যায়ে আত্মকথা বা স্মৃতি লেখার কাজটি এখানেই ইতি টানতে চাই। |