বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, 2০২4
নির্বাচনে না এলে কী ক্ষতি প্রমাণ করেছে বিএনপি
Published : Wednesday, 21 February, 2018 at 9:53 PM

স্টাফ রিপোর্টার॥ নির্বাচনে না এলে কী ক্ষতি সেটা বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না এসে প্রমাণ করেছে বলে মনে করেন স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন। এই শিক্ষা থেকে আগামী নির্বাচনে যেকোনো মূল্যে বিএনপিকে অংশ নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। সোমবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টিফোরের একটি টক শোতে অংশ নিয়ে তিনি এই কথা বলেন। ‘জনতন্ত্র-গণতন্ত্র’ নামের এই টক শোটি উপস্থাপন করেন সামিয়া রহমান। টক শোতে প্যানেল আলোচক হিসেবে আরও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমেনা মহসিন, ড. জিয়া রহমান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইমদাদুল হক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেয়া নানা বক্তব্য নিয়ে তারা বিশ্লেষণ করেন। মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘আমি অনেকবার বলেছি, বিএনপির সরাসরি জাতির সামনে বলা উচিত আমরা যে ইলেকশনে আসিনি এটা ভুল ছিল। কোনো রাজনৈতিক দলের ভুল সিদ্ধান্ত স্বীকার করে নেয়ায় কোনো দোষ নেই। এই জিনিসটা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নেই।’
খালেদা জিয়া মুক্ত হোক বা না হোক বিএনপির নির্বাচনে আসা উচিত বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক। তিনি বলেন, ‘বিএনপির এখন সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে বলা উচিত খালেদা জিয়া ছাড়া পাক বা না পাক আমরা নির্বাচনে যাবো। আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়ে খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করবো। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাও আছে জেলখানায় থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়া যায়।’
‘কেউ আসুক বা না আসুক নির্বাচন হবে’ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের সমালোচনা করেন মোবাশ্বের হোসেন। তিনি বলেন, ‘কেউ আসুক বা না আসুক প্রথমত এই শব্দটাই পছন্দ হয়নি। এটা তো বলার দরকার নেই। নির্বাচন হবে নির্বাচনের মতো। না আসার সম্ভাবনা আমার দল থেকে তৈরি করারই প্রয়োজন নেই। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হবে এখানেই প্রধানমন্ত্রীর ফুলস্টপ দেয়া উচিত ছিল। কে আসবে বা না আসবে এটা আলাপের দরকার ছিল না।’
মোবাশ্বের বলেন, ‘এই প্রশ্ন বোধহয় এই কারণেই উনি তুলেছেন গতবার বিএনপি আসেনি। গতবার আসেনি বলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ফিফটি পার্সেন্ট বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়ে গেল। এটা খুবই দুঃখজনক। জনগণের কাছে রিপ্রেজেন্ট করার মতো ইলেকশন সেটা হয়নি।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে আমেনা মহসিন বলেন, ‘আমি যখন প্রধানমন্ত্রী তখন আমি আমার স্টেটকে রিপ্রেজেন্ট করছি। যখন আমি ক্ষমতার ওই জায়গাতে বসে আছি ও পুরো জাতির প্রতিনিধিত্ব করছি তখন আমি কী বলছি সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে। এই প্রেস কনফারেন্সটা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) দলের প্রধান হিসেবে করেননি। তিনি করেছেন একটি দেশ সফর করে এসে। এজন্য ভাষার ব্যবহারে একটু সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. জিয়া রহমান বলেন, ‘আমার সামগ্রিকভাবে মনে হয় নির্বাচন যথাসময়ে হবে এবং বিএনপিও আসবে। তবে রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে ইমদাদুল হক বলেন, ‘নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত, গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। নির্বাচনের পূর্বশর্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও সবার অংশগ্রহণ। এগুলো নিশ্চিত করে নির্বাচন করলে দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে। এর দ্বারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাও এর ওপর অনেকটা নির্ভরশীল।’
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, বিএনপি এখন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। এই পরীক্ষায় বিএনপি কোন দিকে যাবে সেটা দলটির নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করবে বলে মনে করেন তিনি।
‘প্রশ্নফাঁস কত আগে হলো সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়’
আলোচকরা কথা বলেন প্রশ্নফাঁস প্রসঙ্গেও। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জের টেনে আমেনা মহসিন বলেন, ‘এর আগে কখনও এভাবে প্রশ্নফাঁস হয়নি। এর জন্য ডিজিটালাইজেশনকে দুষলে হবে না। তাহলে বিদেশে সবকিছু বন্ধ হয়ে যেত। প্রশ্নফাঁস কত আগে হলো সেটাও গুরুত্বপূর্ণ না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, ‘পাবলিক পরীক্ষায় এমসিকিউ সিস্টেম পাল্টানো দরকার। এর জন্য আমরা সবাই ভুগছি। আমরা পড়াতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। ছাত্রদের ফলাফলের সঙ্গে পারফরম্যান্স ম্যাচিং হচ্ছে না।’
মোবাশ্বের হোসেন মনে করেন, পরীক্ষার ধরনে পরিবর্তন হয়েছে। ২০ বছর আগে প্রশ্নপত্রের ওপর যা খুশি তা লিখলেও বের করে দেয়া হতো না। এখন পেন্সিলের দাগ দিলেই বের করে দেয়। আগে প্রশ্নফাঁসে তেমন কোনো প্রভাব না পড়লেও এখন প্রভাব পড়ে বলে মনে করেন তিনি।
মোবাশ্বের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আশেপাশের লোকজন হয়ত তাকে প্রশ্নফাঁস সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। একটি টিভি চ্যানেল আগের রাতে যে প্রশ্নপত্র দেখিয়েছে তা দিয়ে পরদিন পরীক্ষা হয়েছে। এটা ভয়াবহ অবস্থা।’ প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে একটি চক্র নীনলকশা করছে বলে আশঙ্কা করছেন এই বিশ্লেষক।
ড. জিয়া রহমান বলেন, ‘প্রশ্নফাঁস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য পলিটিক্যাল কৌশল হতে পারে। প্রশ্নফাঁস রোধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমাদের দেশের সংস্কৃতি হলো কোনো ব্যর্থতা বা সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করলে সরকারের পদত্যাগ চাওয়া শুরু হয়।’ পুরো সিস্টেমে গলদ থাকায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো যাচ্ছে না বলে মনে করেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি