শিরোনাম: |
রাজধানীতে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তি, বৃষ্টি আরও দুইদিন
|
স্টাফ রিপোর্টার ॥
বিদায়বেলায় চিরচেনা রূপ ধারণ করেছে বর্ষাকাল। কয়েক দিন আগে ভারী বৃষ্টি শুরু হয় চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে। এখন এই বৃষ্টি ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। শুক্রবার (১২ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশ মেঘলা, বিভিন্নস্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। দুপুর ১২টা থেকে বেলা সোয়া ২টা পর্যন্ত সোয়া দুই ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে নগরীর বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। তবে সাপ্তাহিক ছুটির কারণে যানজটের কবল থেকে মুক্ত ছিল ঢাকাবাসী। আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী দুদিন ভারী বৃষ্টি চলবে। এদিকে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় আজ শহরে যানজট কম থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় বর্ষাকালের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পানি জমা পথে চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে রামপুরা, বনানী-১১, মিরপুর-১০, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১৩ ও সেনানিবাস এলাকাসহ অনেক জায়গার রাস্তায় হাঁটু সমান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও এর থেকেও বেশি পানি জমেছে। এ সময় নোংরা পানি ডিঙিয়ে নগরবাসীকে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। রাস্তা সংস্কার ও মেট্রো রেলের মতো উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় মালিবাগ ও রোকেয়া সরণির মতো এলাকায় অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এসব এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বৃষ্টির পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারে হাঁটুপানি দেখা গেছে। নিম্ন-আয়ের মানুষ, বিশেষ করে দিনমজুররা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পড়েছেন। বৃষ্টির কারণে তাদের স্বাভাবিক কর্মজীবন থেমে গেছে। বেশিরভাগই খারাপ আবহাওয়ার মুখে ঘর থেকে বের হতে পারেননি। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাঙামাটিতে ১৬৫, হাতিয়ায় ১৩৫, সীতাকুণ্ডে ১২৯, টাঙ্গাইলে ১২২, কুতুবদিয়ায় ১১১, সন্দ্বীপে ১০১ এবং চট্টগ্রামে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিন্তু সকালের পর দফায় দফায় বৃষ্টি হতে থাকে দেশজুড়ে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর ১২টার পর বৃষ্টির দাপট বাড়তে থাকে দেশের মধ্যাঞ্চলে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ১২টা থেকে বেলা সোয়া দুইটা পর্যন্ত ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়। আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস বলেন, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় আজ রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ৪৮ ঘণ্টায় যমুনা নদীর জামালপুর জেলায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ ছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের সুরমা, কুশিয়ারা, কংস, সোমেশ্বরী, ফেনী, সাঙ্গু, মাতামুহুরি, হালদাসহ প্রধান নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। |