শনিবার, ২০ এপ্রিল, 2০২4
রোহিঙ্গা গণহত্যার আন্তর্জাতিক বিচারের বিপক্ষে ভোট দিল কেবল চীন ও ফিলিপাইন
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Friday, 27 September, 2019 at 10:25 AM

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাসহ সংখ্যালঘুদের ভয়াবহ নির্যাতন-নিপীড়নের আন্তর্জাতিক তদন্ত ও বিচারের প্রস্তাবকে একতরফা দাবি করে ভোটাভুটির আহ্বান জানিয়েছিল চীন। পাশপাশি মিয়ানমারের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। ভোটের পর দেখা যায় কেবল চীন ও ফিলিপাইন ছাড়া কেউই ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়নি। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ৩৭টি। কোনো পক্ষ না নিয়ে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে আটটি দেশ- ভারত, জাপান, নেপাল, কঙ্গো, ক্যামেরুন, অ্যাঙ্গোলা, কিউবা ও ইউক্রেন। মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছে ৩৭-২ ভোটে।

মিয়ানমারে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে নতুন করে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটিতে দেশটির পক্ষে এবারই সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের সমান্তরাল নীতিতে চলা রাশিয়া বর্তমানে মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নয়। প্রস্তাব সম্পর্কিত দেশ হিসেবে মিয়ানমার মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিলেও সদস্য না হওয়ায় ভোট দিতে পারেনি। কিউবা সুনির্দিষ্ট কোনো দেশভিত্তিক প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে থাকে। তবে এবার দেশটি প্রস্তাবটির পক্ষে অবস্থান নিলেও নীতিগত কারণে ভোট দেওয়া থেকেই বিরত থেকেছে।

‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমান ও অন্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ বিষয়ে প্রস্তাবটি উত্থাপন করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। গৃহীত প্রস্তাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যৌন অপরাধসহ সব ধরনের অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মানবাধিকার লঙ্ঘনসংশ্লিষ্ট সব আন্তর্জাতিক বিধান ও আন্তর্জাতিক বিচারপ্রক্রিয়া তথা জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার আওতায় আনার জন্য তদন্তপ্রক্রিয়া জোরদার করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে (আইসিসি) চলমান প্রক্রিয়ার পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) শরণাপন্ন হওয়ার উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক পরিসরে উৎসাহিত করা হয়েছে।

এ ছাড়া মিয়ানমারবিষয়ক ‘নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তথ্যানুসন্ধানী মিশনের’ প্রতিবেদনগুলো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং সাধারণ পরিষদের মাধ্যমে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সব অঙ্গ-সংগঠনের বিবেচনার্থে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রস্তাবটিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলমান সব প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে এরূপ পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এখতিয়ারের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

জেনেভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান গতকাল সন্ধ্যায় ভোটের আগে মানবাধিকার পরিষদকে বলেন, মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্মম নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। তবে, দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মিয়ানমার এখনো উত্তর রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে।

গৃহীত প্রস্তাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পাদিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী উত্তর রাখাইন অঞ্চলে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে নিজেদের আবাসস্থলে ফিরে যেতে উৎসাহিত করতে মানবাধিকার পরিষদ মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে প্রস্তাবে রোহিঙ্গারা ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত তাদের গুরুভার বহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে আহ্বান জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষে জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পথে এই প্রস্তাব একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।

ভোটের আগেই মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, মিয়ানমার তার অভ্যন্তরীণ বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সক্ষম। প্রস্তাবে কেবল একটি সম্প্রদায়ের মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

চীনা প্রতিনিধিও প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠকসহ সাম্প্রতিক সময়ে যে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে সেগুলো তুলে ধরতে এই প্রস্তাব ব্যর্থ হয়েছে।

ফিলিপাইনের প্রতিনিধি প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বলে এই সংকটের মূল কারণগুলো সমাধানের ওপর জোর দেন। জাপানের প্রতিনিধি মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান।



সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি