শিরোনাম: |
খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক ব্যবহারে বাড়ছে ডায়াবেটিস
|
জেলা প্রতিনিধি ॥
দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা। মানুষ এখন অনেক বেশি আরামপ্রিয় হওয়ায় শরীরে বাসা বাঁধছে নীরব ঘাতক ডায়াবেটিস। এছাড়া খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক ব্যবহারও ডায়াবেটিস রোগের অন্যতম কারণ। এ রোগে একবার আক্রান্ত হলে পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩২ ডায়াবেটিস রোগী। সদর হাসপাতাল চিকিৎসাধীন রয়েছেন কলারোয়া সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের ভাদিয়াড়ি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক (৭৫)। তিনি বর্তমানে অচেতন হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ২ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালে স্বামীর পাশে থাকা এম এ খালেকের স্ত্রী আসমা বেগম জানান, ১২ বছর আগে ডায়বেটিস রোগ ধরা পড়ে এম এ খালেকের। গত ২১ অক্টোবর সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এতগুলো বছর ওষুধপত্র খেয়ে ভালোই চলছিল। কিন্তু এখন ডায়বেটিসের মাত্রা বেড়ে গেছে। ওষুধপত্র কাজ করছে না। কিছুদিন আগে স্ট্রোক করার পর ইনসুলিন দিতে হচ্ছে। ওষুধে এখন কাজ হচ্ছে না। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ তিনি আজও খুঁজে পাননি। তিনি বলেন, স্বামী এম এ খালেক এভাবে কতদিন বেঁচে থাকবেন জানি না। আর হয়তো তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন না। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেখ আব্দুল মালেক (৬৫)। সাতক্ষীরা সদরের থানাঘাটা এলাকায় বাসিন্দা তিনি। তার গল্পটাও প্রায় একই রকমের। আব্দুল মালেক বলেন, আমি সাতক্ষীরা টেক্সটাইল মিলে চাকরি করতাম। ১৫ বছর আগে ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। সেই থেকে আজও ভুগছি। অনেক ওষুধপত্র খেয়েও কোনো ফল হলো না। ডাক্তার ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি পরিশ্রম করতে বলেছিলেন। বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে এখন আর পরিশ্রম করতে পারি না। রোগটিও নির্মূল হলো না। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মানুষ আরামপ্রিয় হয়ে গেছে। পরিশ্রম করতে চায় না। যার ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার এটি একটি অন্যতম কারণ। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে খাদ্যদ্রব্যে মাত্রা অতিরিক্ত ভেজাল। খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহার করা হয় কীটনাশক ও রাসায়নিক। এসব খাদ্য খাওয়ার ফলেও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ রোগে একবার আক্রান্ত হলে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তবে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত খাবার গ্রহণ ও আরাম আয়েশ ত্যাগ করে নিয়মিত পরিশ্রমের বিকল্প নেই। |