বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, 2০২4
বিনা চিকিৎসায় ধুকে মরছেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন
Published : Monday, 20 January, 2020 at 8:47 PM

 জেলা প্রতিনিধি ॥
অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না জটিল রোগে আক্রান্ত বয়োঃবৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন। তার বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার জোনাইডাঙ্গা গ্রামে। গতবছর ১ মে শরীরের উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগে স্ট্রোক করে মস্তিস্কে রক্ত জমাট, হাত-পা অবশ ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে আছেন তিনি। গত ৮ মাস ধরে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ও পরে রংপুরস্থ একতা ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে জীবনে বেঁচে গেলেও তিনি অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা ও চিকিৎসা খরচ যোগাতে না পারায় রোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না। শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকু ছাড়া সহায় সম্বল যা ছিলো স্বামীর চিকিৎসা করাতে মুক্তিযোদ্ধা পতœী সাহের বানু এখন অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতা তুলে কোনো রকমে সংসার চালাচ্ছেন। পরিবারে আছে তাদের দুই মেয়ে। এক দিকে স্বামীর পঙ্গুত্ব জীবন অন্যদিকে ঘরে বিবাহ উপযুক্ত কলেজ পড়ুয়া দুই কন্যার ভরণ-পোষণ ও পড়া-লেখার খরচ জোগাতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। আগে স্বামী-স্ত্রী দু’জনই অন্যের চাতালে শ্রম দিয়ে উপার্জন করতেন এখন একাকেই সব করতে হয়। তাই তার সংসারে এখন বাসা বেঁধেছে অভাব ও অনটন। কোনো কোনো দিন অনাহারে-অর্ধাহারে কাটতে হচ্ছে এমন দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন বলে দুঃখের কথা বলতে সাহের বানু কেঁদে ফেলেন। এমতাবস্থায় সাহায্য চেয়ে সমাজের বিত্তবান মানুষসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। আজ ৭৫ বছর বয়সের ভারে ও অসুস্থ্যতায় নূয়ে পড়লেও একাত্তরের উত্তাল দিনে ২৩ বছরের যুবক ছিলেন আব্দুল বাতেন। সেই সময় উপজেলার মালতিবাড়ীতে বাবা-মায়ের সাথে বাস করেছিলেন। বাবার নিজ গ্রাম হাতিয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীণ হওয়ার পর তাদের জীবন ছিলো খুবই অভাবের। তাই দরিদ্রতা তখন থেকেই ধাওয়া করেছিলো তাকে। পাক বাহিনীর বর্বরতা যখন বেড়ে গিয়েছিলো চারিদিকে খুন-হত্যা, ধর্ষন, লুটপাট, অগ্নি সংযোগ চলছিলো। বর্বরচিত পাক-হানাদার বাহিনীর নিপীড়ন-নির্যাতনে হাজারো মানুষের আহাজারি এই যুবকের হৃদয় বিঘ্রে দেয়। ১৯৭১ সালে পাক সেনার অত্যাচারে নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিলেন না তিনি। দেশ ও দেশের মাটি-মানুষের প্রতি ভালবাসা তাকে ঘরে বসে থাকতে দেয়নি। দেশের মাটি ও মানুষের কথা চিন্তা করে বাপ-মা, ভাই-বোন, স্বজনদের ভালবাসাকে ছিন্ন করে অস্ত্র হাতে যুদ্ধে বেড়িয়ে পড়ে এই যুবক। সাহসের সাথে এলাকায় যুবকদের সংঘটিত করে ভারতে যুদ্ধের প্রশিক্ষন নেন। সহ-যোদ্ধাদের সাথে দাপটের সাথে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে নেন তিনি। মাথায় গুলির চিহ্ন। সম্মুখ যুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে গুলির আঘাত খেয়ে সেদিনও প্রাণে বেঁচে গেছেন আব্দুল বাতেন। আব্দুল বাতেনের স্ত্রী জানান, ‘মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিকট আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আবেদন পত্র সঠিক দপ্তরে পৌঁছাতে না পারার কারণে সাহায্য পাই নাই।’ ছোট মেয়ে আশা মনিকে কয়েকবার পুলিশের লাইনে দাড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু চাকরি হয় নাই। এদিকে, উলিপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ফয়জার রহমান ও পৌর কমান্ডার মুক্তা খন্দকার জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন খুবই সাহসী যোদ্ধা ছিলেন।
 সে একজন আমাদের ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধা। তার অসুস্থতার পর পরিবারটিতে অভাব-অনটন চলছে। এবতাবস্থায় তার উপযুক্ত কন্যাকে চাকরির ব্যবস্থা করতে পারলে অভার কিছুটা লাঘব হতো।

আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি