শিরোনাম: |
দ্রুত জমি হারাচ্ছে বিজেপি!
|
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
ক্ষমতা হস্তান্তরের দু'বছরের মধ্যেই ত্রিপুরার বিপ্লব দেব নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার জনপ্রিয়তা হারতে শুরু করেছে। আদিবাসী ও বাঙালি উভয়ের মধ্যে থেকেই সমর্থন হারাচ্ছেন বিপ্লব দেবের সরকার। একইভাবে পশ্চিমবঙ্গেও লোকসভা নির্বাচনে সাফল্য পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই বিজেপি আস্থা হারিয়ে ফেলছে। এই প্রবণতা বুমেরাং হতে পারে বিজেপির পক্ষে। জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে দ্রুত লোকসভা নির্বাচনে এবার পশ্চিমবঙ্গে আসনপ্রাপ্তির বিচারে দুই থেকে বেড?ে ১৮ হয়েছে বিজেপি। কিন্তু তারপর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হতে গিয়ে সব গোলমাল হতে শুরু করে। দুই রাজ্যেই বিজেপির পক্ষে কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না। কোনও রাজনৈতিক ইতিহাস ছাড়াই বিজেপি স্বল্পদিনে প্রাধান্য পেয়েছে দুই রাজ্যে। আবার জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে তার থেকেও দ্রুত। বিজেপি দুই রাজ্যে ক্রমশ ব্যাকফুটে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯ প্রণয়নের পর থেকে বিজেপি দুই রাজ্যে ক্রমশ ব্যাকফুটে হাঁটতে শুরু করেছে। মানুষ বুঝতে পেরেছে সিএএ বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের জন্য মূলত প্রযোজ্য। স্বাভাবিকভাবেই, উভয় রাজ্যেই এই আইনের পক্ষে বিপক্ষে নানা মত তৈরি হয়েছে। যার মধ্যে বিরোধী মতই প্রবলরূপে উঠে আসছে। যার ফলে বিজেপি বিপাকে পড?ে যাচ্ছে। বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা উভয় রাজ্যেই বিজেপিকে অনুবিক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখতে হত। হঠাৎই আসা ঝড?ের মতো বিজেপির উত্থান হয়। কিন্তু বিজেপি দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। বিজেপির সঙ্গে স্থানীয় সংস্কৃতির যোগ না থাকা, কোনও আন্দোলনের ইতিহাস না থাকা বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে বাংলা ও ত্রিপুরায়। ত্রিপুরার সংস্কৃতির ছোঁয়া নেই বিপ্লবের মধ্যে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, পোশাক, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট- সবকিছুতেই দেখুন হিন্দির ছোঁয়া। কোথাও বাংলা বা ত্রিপুরার সংস্কৃতির ছোঁয়া আপনি পাবেন না। প্রাক্তন সিএম মানিক সরকারকে রাজ্যবাসী যেভাবে দেখতে ইচ্ছুক, বিপ্লব দেবকে সেভাবে দেখা যায় না। উভয়ে পুরোপুরি বিপরীতধর্মী। বঙ্গ সংস্কৃতিতেও মানানসই নয় বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতিও তদ্রুপ। এখানেও ‘জয় শ্রী রাম' স্লোগান থেকে শুরু করে বিজেপি নেতাদের আচার-আচরণ হিন্দি বলয়ের নেতাদের মতো। এখানে বাংলা-বাঙালিমনস্ক নেতার অভাব বিজেপিতে। তার উপর নেতাদের বাকসংমের বড্ড বেশি অভাব। যার ফলে প্রভাব পড়ছে বিজেপির সংগঠনে। বিজেপির ‘হিন্দি-সংস্কৃতি’ উভয় রাজ্যেই স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির ‘হিন্দি-সংস্কৃতি' উভয় রাজ্যেই তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সাধারণ লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকী দলটির সমর্থকরাও এই সত্যটি গ্রহণ করেছেন বলে মনে হয়। বঙ্গ এবং ত্রিপুরা উভয় দেশেরই বাম শাসনের ইতিহাস রয়েছে। বামদের পরিবর্তে বাংলায় তৃণমূলের সংস্কৃতি আগের মতোই রয়েছে। কিন্তু ত্রিপুরায় বামেদের সঙ্গে বিজেপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির আকাশপাতাল ফারাক। বিরোধী ভোট একত্রিত হয়ে বিজেপির সাফল্য দুই রাজ্যেই বিরোধী দলের ভোট একত্রিত হয়ে বিজেপিকে সাফল্য এনে দিয়েছে। মোদির বুদ্ধিমান জরিপ কৌশল এবং ক্যারিশ্মার জেরে হঠাৎ ভাগ্যের উত্থান ঘটেছিল দুই রাজ্যেই। ত্রিপুরায় বিজেপি লড়াই শুরু করে কংগ্রেস থেকে আগত প্রবীণ নেতাদের নিয়ে। লজ্জাজনক পরাজয়ের দিকে হাঁটছে বিজেপি আরএসএসের সুনীল দেওধর ২০১৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভোটের পরই তিনি সরে যান রাজ্য থেকে। অনেক বিধায়ক মনে করেন আগামী নির্বাচনে বিজেপি সরকার বাঁচাতে পারবে না। তারা লজ্জাজনক পরাজয়ের দিকে যাবে। উপনির্বাচনে একেবারে বিপরীত ফল একইভাবে ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরে সবাই আশা করেছিল বাংলায় বিজেপির সামনে বিরাট সুযোগ এসে গেছে। কিন্তু তা যে ঠিক নয়, প্রমাণ করে দিয়েছে সাম্প্রতি উপনির্বাচন। একেবারে বিপরীত ফল দেখা গেছে এ রাজ্যে। উপনির্বাচনের বিজেপি খড়গপুর আসনটি ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল, যা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছেড?ে যাওয়া আসন। আবার কালিয়াগঞ্জেও লোকসভা ভোটে ৫৬ হাজার ভোটে এগিয়ে থেকেও উপনির্বাচনে হেরেছিল। একাধিক বিজয়ী সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে এখনই তাদের নির্বাচনী এলাকার প্রতি অবহেলা করার অভিযোগ রয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বের তীব্র অবহেলায় ব্যর্থতা দলের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট বলছে, দক্ষিণবঙ্গের একজন সাংসদও বড় শহরে তাঁর অফিসও খোলেননি। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লোকসভা নির্বাচনের পরে তাঁর নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন না করার জন্য জনগণের রোষে পড?েন। রাজ্য নেতৃত্বের তীব্র অবহেলার কারণে উত্তরবঙ্গে, যেখানে লোকসভা ভোটে তৃণমূল ধুয়ে গিয়েছিল, সেখানেও কর্মীরা জমি হারাচ্ছেন। |