শুক্রবার, ২৯ মার্চ, 2০২4
সারওয়ার আলীকে ‘শায়েস্তা’ করতেই হত্যাচেষ্টা
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Thursday, 23 January, 2020 at 4:03 PM

‘শায়েস্তা’ করার উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলীকে সপরিবারে হত্যা ও ডাকাতির চেষ্টা চালানো হয়। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সারওয়ার আলীর সাবেক গাড়িচালক শেখ নাজমুল ইসলামসহ পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। নাজমুলের দাবি, গরিব হওয়ার কারণে সারওয়ার আলীর স্ত্রী তার সঙ্গে ‘সঠিক ব্যবহার’ করেননি। যে কারণে চাকরি ছেড়ে দিয়ে খারাপ আচরণের প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে গত ৫ জানুয়ারি রাতে সারোয়ার আলী ও তার মেয়ের বাসায় হামলা চালার তারা।

আজ দুপুরে পিআইবি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।
এ ঘটনায় মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- শেখ নাজমুল ইসলাম (৩০), শেখ রনি (২৫), মো. মনির হোসেন (২০), মো. ফয়সাল কবির (২৬) ও মো. ফরহাদ (১৮)। এদের মধ্যে ফরহাদকে ১২ জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয়। বাকিদের বুধবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে পিবিআই। একই ঘটনায় জড়িত আসামি আল আমিন মল্লিক ও নূর মোহাম্মদ পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নাজমুল হিন্দি সিনেমার ভক্ত। তিনি ভাবতেন, গরিব হওয়া অপরাধ না। গরিব হওয়ার কারণে সারওয়ার আলীর স্ত্রীর কাছে তিনি সঠিক ব্যবহার পাননি না। এ কারণে চাকরি ছেড়ে দেন এবং পরিকল্পনা করেন, এর একটি প্রতিবাদ হওয়া দরকার। তাই সারওয়ার আলীর পরিবারকে উচিত শিক্ষা দেয়া ও ভয় দেখিয়ে হত্যা ডাকাতির পরিকল্পনা করেন নাজমুল।

তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগী হিসেবে চাচাতো ভাই রনিকে রাজি করান তিনি। এবং ভগ্নিপতি আসামি আল-আমিন, নুর মোহাম্মদ ও ফয়সালকে ডাকাতির কাজে নিয়োগ করেন। এ কারণে রাজধানীর আজমপুর লেবার মার্কেট হতে মনির ও ফরহাদকে দৈনিক ৫০০ টাকা ভিত্তিতে ডাকাতির কাজে নিয়োগ করেন নাজমুল। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, কেউ যেন চিনতে না পারে সেজন্য নাজমুল ৩ মাস ধরে দাড়ি-গোঁফ না কেটে বড় করেন। গত ৫ জানুয়ারি বিকেলে আশকোনা এলাকার হোটেল রোজ ভ্যালির ৩০৩ নম্বর কক্ষে ৭ ডাকাতের সঙ্গে চূড়ান্ত পরিকল্পনা করেন নাজমুল। বাসার পরিবেশ, কক্ষ, পার্কিং প্লেস সম্পর্কে সকলকে অবগত করেন এবং ডাকাতির সময় কার কী ভূমিকা হবে তা বুঝিয়ে দেন। সারোয়ার আলীর বাড়িতে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অংশ হিসেবে ডাকাতির পরিকল্পনা হলেও ক্ষোভের বিষয়টি গোপন করেন নাজমুল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় হোটেল থেকে নাজমুল প্রথমে একা বেরিয়ে যান।

নাজমুল একটি ব্যাগে ৭টি চাপাতি ও ৫টি সুইচ গিয়ার ছুরি নিয়ে ঘটনাস্থল এলাকায় এসে রনির হাতে ছুরিগুলো দেন। রনি ঘটনাস্থলে থাকা আসামিদেরকে ছুরিগুলো বিতরণ করেন। নাজমুল রাত ৯টায় পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪ প্যাকেট বিরিয়ানি নিয়ে বাসায় প্রবেশ করে দারোয়ান হাসানকে দেন এবং কৌশলে ঘুমের ঔষধ খাওয়ান। পরে চাপাতিসহ ব্যাগটি গ্যারেজের পাশে রেখে দেন। নাজমুল ও ফয়সাল ২য় তলায় তাদের সেন্ডেল খুলে রেখে ৩য় তলায় গিয়ে সারওয়ার আলীর মেয়ে ড. সায়মা আলীর বাসায় নক করেন। দরজা খুললে তাকে ধাক্কা দিয়ে বাসার ভেতরে প্রবেশ করেন নাজমুল ও ফয়সাল। এরপর সায়মা আলী, তার স্বামী হুমায়ুন কবির ও মেয়ে অহনা কবিরকে ছুঁরির ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে রাখেন।

পরে রাত ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে ফয়সালকে ৩য় তলায় রেখে ৪র্থ তলায় ডা. সারওয়ার আলীর ফ্ল্যাটে এসে নক করেন নাজমুল। দরজা খুলে দিতেই জোরপূর্বক ভেতরে প্রবেশ করে তাকে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে মেঝেতে ফেলে গলায় ছুরি ধরেন এবং এই সময়ে তার স্ত্রী ডা. মাখদুমা নার্গিস চিৎকার শুরু করলে নাজমুল বাইরে অপেক্ষারত সহযোগীদের ফোনে ভেতরে আসতে বলেন। তাদের অনবরত চিৎকার চেচামেচি শুনে ২য় তলার ভাড়াটিয়া মেজর (অব.) সাহাবুদ্দিন চাকলাদার ও তার ছেলে মোবাশ্বের চাকলাদার ৪র্থ তলায় আসেন। দারোয়ান ঘুমিয়ে না পড়ায় নাজমুলের বাইরে অবস্থানরত সহযোগীরা ফোন পেয়েও ভেতরে ঢুকতে না পারায় নাজমুল হতাশ হয়ে ভয় পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যান। পরে অন্যান্যরাও দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে পুলিশ এসে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং আসামিদের ফেলে যাওয়া যাবতীয় আলামত উদ্ধার করে।


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি