শিরোনাম: |
টাঙ্গাইলে পানির দামে দুধ বিক্রি
|
জেলা প্রতিনিধি ॥
করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় গরুর দুধের বিক্রি কমে গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লিটার প্রতি ৪৫-৫০ টাকা থেকে ১৮-২০ টাকায় নেমে এসেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার খামারি, দুধ ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। সরেজমিনে গেল সোমবার উপজেলার ধনবাড়ী দুধ বাজার ঘুরে দেখা যায়, খামারি, দুধ ব্যবসায়ী ও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত গরুর দুধ নিয়ে বসে আছেন। ক্রেতা কম থাকায় অনেক দুধ নিয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছে। দুধের দাম কম পাওয়ায় অনেকেই আবার ইচ্ছা মতো দুধ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে লোকসানে দুধ বিক্রি করেছেন তারা। উপজেলার দুধ বিক্রেতা মো. শহিদ আলী, আ. বারেক, আনিছুর রহমান জানান, 'কী অসুক আইছে দেশে, দুধ খাইলে নাকি মানুষ মইরা যাইব। সকাল থেকে বয়া (বসে) আছি এখন পর্যন্ত কেউ দুধ বেচতে পরি নাই।' অপর দুধ বিক্রেতা আ. কাদের জানান, চার সদস্যের সংসারে আয়ের একমাত্র উৎস দুটি গাভীর ছয় লিটার দুধ। গত সপ্তাহে ছয় লিটার দুধ বিক্রি করছিলাম ৩০০ টাকায়। কিন্তু কয়েকদিন ধরে প্রতি লিটার দুধ বাধ্য হয়ে ১৮/২০/২২ টাকা দরে বিক্রি করছি। করোনাভাইরাস আতঙ্কে ক্রেতা কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কম দামে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। উপজেলার দুধ খামরি মো. নয়ন মিয়া জানান, আমার তিনটি গাভী প্রতিদিন ১৭/১৮ লিটার করে দুধ দেয়। দুধ বিক্রি করে সংসার চালাই। এর আগে প্রতিদিন ৮ থেকে ৯‘শত টাকার দুধ বিক্রি করতাম। এখন একেবার পানির দামে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। এত দুধ কোথায় রাখবো বা কি করবো। বিক্রি না করে উপায় নেই। তিনি আরও বলেন, এই টাকা দিয়ে সংসারের খরচ করবো না গরুর খাবার কিনব, চিন্তায় আছি। অন্যদিকে বাজারে গো-খাদ্যসহ ওষুধের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। অথচ সপ্তাহখানেক ধরে ক্রেতারা ২০ টাকার বেশি দাম দিচ্ছেন না। দুধ ক্রেতা মো. মোয়েজ্জোম হোসেন জানান, ভাইরাসের কারণে সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাজারে তেমন ক্রেতাও নেই। দুধের দাম কম থাকায় আবার অনেকেই বেশি করে দুধ কিনে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিচ্ছেন। মিষ্টি বিক্রেতা খিতিশ, আ. বারেক, কৃষ্ণ চন্দ্র ঘোষ, রাখাল চন্দ্র ঘোষ জানান, করোনাভাইরাস আতঙ্কে দুধের দাম একেবারে কমে গেছে। ক্রেতারা প্রয়োজন ছাড়া মিষ্টিও কিনতে আসে না। আগের চেয়ে আমরা মিষ্টি অনেক কম বানাচ্ছি। মিষ্টি বানালেও বিক্রি করতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে কম দামে দুধ কিনেতে হচ্ছে। ধনবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, করোনাভাইরাসের সাথে গাভীর দুধের কোন সম্পর্ক নেই। মানুষ আতঙ্কিত হয়ে অনেকেই এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। আমাদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে গাভী পালনকারীরা যাতে আতঙ্কিত না হয় তার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। |