শুক্রবার, ২৯ মার্চ, 2০২4
বাড়ি ফেরার ঢল, ঢাকায় ফেরত পাঠাচ্ছে পুলিশ
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Thursday, 21 May, 2020 at 8:26 PM

সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঈদকে সামনে রেখে নিজ নিজ বাড়ির দিকে ছুটছেন সাধারণ মানুষ। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটেও নামে যাত্রীদের ঢল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো সুযোগ নেই ঘাট এলাকায়। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী মহাসড়কে পুলিশি বাধা টপকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার শত শত মানুষ বিভিন্ন কৌশলে পায়ে হেঁটে জড়ো হন পাটুরিয়া ফেরিঘাটে। তবে ফেরি পারাপার বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন তারা। কেউ কেউ পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘাটের অদূরে ট্রলার কিংবা ইঞ্জিনচালিত নৌকা করে নদী পাড়ি দেন। আবার অনেক যাত্রীকে ঘাট থেকে বাসে করে ঢাকায় ফেরত পাঠাতে দেখা গেছে পুলিশকে।

ঘাটে আসা যাত্রীরা জানান, ঈদের মধ্যে শপিংমল, মার্কেট, দোকানপাট সবই বন্ধ রয়েছে। তাদের কর্মস্থলগুলো বন্ধ। আয়-উপার্জন নেই। ঢাকায় বসে থেকে তারা কী করবেন? বাধ্য হয়ে ঈদ উপলক্ষ্যে গ্রামের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন তারা। মহাসড়কের বহু স্থানে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, বিভিন্ন কৌশলে পুলিশের চেকপোস্ট এড়িয়ে ফেরিঘাটে পৌঁছেছেন তারা। কিন্তু ফেরি বন্ধ থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে তাদের।

অনেকেই পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘাটের অদূরে ইঞ্জিনচালিত নৌকা কিংবা ট্রলারে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দেন। আবার কেউ কেউ ফেরির অপেক্ষায় বসে থাকেন। তবে ঘাট এলাকায় যাত্রীদের থাকতে দেয়নি পুলিশ। মাইকিং করে ঘাট ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়। কোনোভাবেই যেন ঢাকা থেকে আসা এসব যাত্রী নদীর পার না হতে পারেন তার জন্য ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন পুলিশ সদস্যরা। ঘাটে আসা যাত্রীদের বিনা ভাড়ায় বাসে করে ঢাকায় ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থাও করে পুলিশ প্রশাসন।
মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, ‘ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মোট ১০টি স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্টে সব ধরনের যাত্রীবাহী যানবাহন আটকে দেয়া হচ্ছে।’ তিনি জানান, মানিকগঞ্জের প্রবেশদ্বার গোলড়া এলাকায় সব ধরনের যানবাহনে তল্লাশি করে শুধু পণ্যবাহী ট্রাক, জরুরি সরকারি যানবাহন, রোগীবাহী গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সকে যেতে দেয়া হচ্ছে। অন্য সব ধরনের যানবাহনকে ঘুরিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

এরপরও বিভিন্ন কৌশলে মানুষজন শাখা রাস্তা, কিংবা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘাটে এসে জড়ো হচ্ছেন জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘এসব মানুষদের ফেরি পার না করে উল্টোপথে বাস ভাড়া করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২০টির মতো গাড়িতে করে কয়েক শ যাত্রীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’ ‘আর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্রলার কিংবা নৌকা চলাচলকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি। এদিকে শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে সোমবার বিকেল ৩টা থেকে সকল প্রকার চলাচল বন্ধ থাকলেও কিছু অসাধু ট্রলার ও সিবোর্ট চালকরা নদী পারাপার করে আসছিলেন। পুলিশের নজর এড়াতে তারা সরাসরি শিমুলিয়া ঘাটের বদলে মাওয়া পুরাতন ফেরি ঘাট থেকে যাত্রী পারাপারের চেষ্ট করছিলেন। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে ৪৮টি ট্রলার ও দুই সিবোট আটক করেছে। এর মধ্যে পদ্মায় ডুবিয়ে দিয়েছে ১৯টি।

মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সিরাজুল কবির জানান, গত মঙ্গলবার থেকে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরিসহ সকল প্রকার নৌযান দিয়ে যাত্রী পারপার সম্পূর্ণ বন্ধ করেছে প্রশাসন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে কড়া নজরদারী করছে নৌপুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। বৃহস্পতিবারও ভেঙ্গে ভেঙ্গে কিছু যাত্রী আসছে মাওয়ার দিকে। তবে তারা শিমুলিয়া ঘাটে না গিয়ে মাওয়া চৌরাস্তা থেকে পশ্চিমে পুরাতন ফেরি ঘাটে চলে যাচ্ছে। এখানে একটি চক্র ট্রলার ও সিবোট দিয়ে ওপারে চর জানাজাত ঘাটে এসব যাত্রীদের পারাপার করে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে ৫টি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। যাত্রী নামিয়ে এর মধ্যে দুটি ট্রলার পদ্মায় ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বুধবার পর্যন্ত ১৭টি ট্রলার পদ্মায় ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বমোট ৪৮টি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে, এর মোট ১৯টি ট্রলার আজ পর্যন্ত ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২টি সিবোটও জব্দ করা হয়েছে অবৈধভাবে লোকজন পারাপারের জন্য। তবে এখন আর মানুষের ঢল নেই শিমুলিয়া ঘাটে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, বুধবার পর্যন্ত ঘাট এলাকায় প্রায় দুইশতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকে ছিল পারাপারের জন্য। গভীর রাতে এগুলো পার করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘাটে নতুন করে আরও পণ্যবাহী প্রায় চারশ ট্রাক এসেছে। সুযোগমত জণস্বার্থে এগুলো পার করে দেওয়া হবে। এছাড়া জরুরি পরিসেবার কোনো গাড়ি আসলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সেগুলো পার করা হবে। তবে কোনো মতেই এখন এই ঘাট দিয়ে কোনো যাত্রীবাহী গাড়ি বা যাত্রী পার করা হবে না।
আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি