শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, 2০২4
৪ টাকা কেজিতেও আম নিচ্ছে না কেউ, ফেলে দেয়া হচ্ছে ডাস্টবিনে
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Friday, 29 May, 2020 at 7:26 PM

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাতক্ষীরার আম ব্যবসায়ী ও চাষিরা। ঝরে পড়া আম বিক্রি করতে পারছেন না তারা। বিক্রি করতে না পারায় নষ্ট হয়ে যাওয়া এসব আম ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। একদিকে বিক্রি নেই অন্যদিকে নষ্ট আম ফেলতেও টাকা দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের। এটিকে ক্ষতির ওপর বাড়তি ক্ষতি বলছেন ব্যবসায়ীরা। সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজার মোড়ে পৌরসভার ডাস্টবিনে শতাধিক মণ নষ্ট আম ফেলে দেয়া হয়েছে। বড় বাজারের আম ব্যবসায়ী মেসার্স রাসেল ট্রেডার্সের মালিক রজব আলী খাঁ বলেন, আম্ফানে ঝরে পড়া আমের কোনো ক্রেতা নেই। নষ্ট হয়ে যাওয়া আম ডাস্টবিনে ফেলতে উল্টো টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আম ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আমের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও চাষিরা ঝরে পড়া আম আমার এখানে রেখে গেছেন। বিক্রি করতে পারলে টাকা দিতে হবে। কোনো বিক্রি নেই।

তিনি আরও বলেন, প্রথমদিকে ২-১০ কেজি করে প্রতি কেজি ৪-৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন কেউ নিচ্ছে না। আম পচে যাচ্ছে। বাধ্য হয়েই ব্যবসায়ীরা আম ফেলে দিচ্ছেন। বড় বাজারে কয়েক হাজার মণ আম নষ্ট হয়ে গেছে। প্রত্যেক আম ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমার ২০ লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।
শহরের মুনজিতপুর এলাকার মৃত এলাহি বক্সের ছেলে আম ব্যবসায়ী হাসান আলী বলেন, আমার ১০ লাখ টাকার আমের বাগান ক্রয় করা ছিল। এক লাখ টাকার আমও নিতে পারিনি। ঝরে পড়ার পর কিছু আম কুড়িয়ে এনেছিলাম, সেগুলো বিক্রি হয়নি। অনেক গাছের আম কুড়াতে যায়নি। ১০ লাখ টাকার আম বাগান থেকে ১৫-১৬ লাখ টাকার আম বিক্রির আশা করেছিলাম। এ বছর পুরো টাকাই লোকসান। কেউ এখন পর্যন্ত খোঁজও নেয়নি।

একই এলাকার সামাত আলীর ছেলে আম ব্যবসায়ী বুলু। তিনি বলেন, আমার চার লাখ টাকার আম বাগান ছিল। ৬-৭ লাখ টাকা বেচাকেনা হবে এমন ধারণা ছিল। তবে সব নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক ক্ষতি হয়েছে আমার। পুরাতন সাতক্ষীরা কলেজমোড় এলাকার আম ব্যবসায়ী আব্দুস সাদেক। তিনিও এ বছর আম ব্যবসায় হারিয়েছেন ৮ লাখ টাকা। তিনি বলেন, ঝড়ের কারণে ৮ লাখ টাকার আমের বাগান নষ্ট হয়ে গেছে। পুঁজির টাকাই নষ্ট হয়ে গেল। কৃষি বিভাগ থেকেও আমরা ব্যবসায়ীরা কোনো সহযোগিতা পাই না।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ির উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম জানান, জেলার ১৩ হাজার ১০০ জন আম চাষি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঘূণিঝড় আম্ফানে সাতক্ষীরায় ১৬ হাজার ২৯৬ মেট্রিক টন আম নষ্ট হয়ে গেছে। এর মধ্যে হিমসাগর, গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, ল্যাংড়া, লতা, আম্রপালিসহ বিভিন্ন প্রজাতির আম রয়েছে। চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ২৯৯টি বাগানে ৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হিমসাগর এক হাজার ৫৫০ হেক্টর, ল্যাংড়া ৫৬৪ হেক্টর ও আম্রপালি ৮৯৯ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বাকি জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির আম চাষ হয়েছে।

তিনি বলেন, ঝড়ে আম পড়ে যাওয়ায় চাষি ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা পাঠানো হয়েছে। কোনো সরকারি সুবিধা আসলে তাদের দেয়া হবে। সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ঝরে পড়া আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতি পোষাতে ত্রাণের সঙ্গে আম দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ক্রয় করে কিছু আম আমরা ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করেছি। তবে সেটি অনেক করতে পেরেছি এমনটি নয়। আমরা ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে উদ্যোগটি নিয়েছিলাম। 


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি