শিরোনাম: |
কোটি কোটি টাকা নিয়ে মানুষকে পথে বসিয়েছে ঠকবাজ সোহেল
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
|
বাড়ি সুনামগঞ্জ, বিয়ে করে ঝিনাইদহে ঘরজামাই থেকে যান। সচিব পরিচয় দিতেন সবাইকে, চাকরি দেয়ার নামে সহজ-সরল বহু মানুষকে ঠকিয়েছেন তিনি। মানুষকে পথে বসিয়ে হাতিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এই ঠকবাজের নাম মিজানুর রহমান সোহেল। ভুয়া ওয়ারেন্ট দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানী করার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে, এই প্রতারককে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। চাকরি দেয়ার নামে এই নারীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন সোহেল। এই নারী জানান, আমাদের মেয়ের চাকরির জন্য সোহেল চার লাখ নিয়েছে। এখন সে পলাতক রয়েছে, চাকরির নামে কিছুই না। এই প্রতারক দুই কোটি টাকার কেস দিয়েছে। এখন তার বিচার চাই আমরা।
তার মতো কয়েকশ’ মানুষ সোহেলের প্রতারণার শিকার। পুলিশের চাকরি, বদলি, প্রমোশন- সবই করিয়ে দিতে পারেন এই ভুয়া সচিব। ভুক্তভোগীরা জানান, মন্ত্রীর পিএস হিসেবে পরিচয় দিতো, কখনও কখনও সচিব হিসেবে পরিচয় দিতো। স্বরাষ্ট্র সচিব বলে আমাদের কাছে পরিচয় দিতো এবং বলতো সে হলো বিশিষ্ট কয়লার ব্যবসায়ী। অনেক পুলিশ সদস্যও ধরা খেয়েছেন সোহেলের কাছে। মিশনে পাঠানোর নামে হাতিয়ে নিয়েছেন টাকা। আবার কখনো পাথর সাপ্লাইসহ নানান লোভনীয় ব্যবসার নামে টাকা নিয়ে অনেককে পথে বসিয়েছেন। এভাবেই সোহেলের খপ্পরে পড়ে অনেকে হয়েছেন সর্বশান্ত। উল্টো ভুক্তোভুগীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন ঠকবাজ সোহেল। ভুক্তভোগীরা জানান, সোহেলের কাছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা পাবো, সে টাকাও দেয় না বিভিন্ন রকমের তালবাহানা করে। আরেকজন বলেন, মেয়ের চাকরির জন্য টাকা নিয়েছে। এজন্য আমরা তার নামে মামলা করেছি, সে আবার উল্টো আমাদের নামে মামলা দিয়ে রেখেছে। এই সোহেলের বিরুদ্ধেও দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে বহু মামলা রয়েছে। প্রতিকার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারি অনেক দপ্তরে তার বিরুদ্ধে অভিযাগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। গ্রেফতারী পরোয়ানাও আছে তার বিরুদ্ধে। আরেক ভুক্তভোগী জানান, ৪ লাখ টাকা নেয় আমার মেয়েকে চাকরি দেবে বলে। টাকাগুলো নিয়ে সে আমাকে চেক দেয়। সেই চেক দিয়ে আমি ২০১৯ সালে মামলা করি। ওই মামলায় তার নামে ওয়ারেন্ট আসে কিন্তু পুলিশ সোহেলকে ধরে না। ঘরজামাই সোহেলের বক্তব্য জানতে ঝিনাইদহের মহেশপুরে তার শ্বশুরবাড়ীতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার জানান, এই ধূর্ত প্রতারককে খোঁজা হচ্ছে। পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, আমরা তাকে গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি। তিনি বর্তমানে পলাতক আছেন। এদিকে ঝিনাইদহে উজ্জল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে রমনা থানায় নারী নির্যাতন মামলায় সোহেলের পাঠানো ভুয়া একটি গ্রেফতারী পরোয়ানার বিষয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, যাচাই করতে গিয়ে দেখলাম যে রমনা থানায় বিগত তিনবছরে কোন গণধর্ষণের মামলা হয়নি। সেক্ষেত্রে এই ওয়ারেন্ট আমাদের রমনা থানার কোন মামলার ওয়ারেন্ট নয় এবং ওই তারিখ ও ওই নম্বরের মামলা কোন গণধর্ষণের মামলা নয়। জাল এই পরোয়ানা তৈরির অভিযোগে প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করবে পুলিশ। উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান আরও বলেন, এই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা এবং তাকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। |