শিরোনাম: |
বরগুনায় বেড়েই চলেছে ডায়রিয়া হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল
|
জেলা প্রতিনিধি ॥
বরগুনায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় ৪ হাজার ৫৯৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিন প্রায় ৬০ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। সরকারি হিসেবে ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্েয মারা গেছেন ২ জন। তবে, বে-সরকারি হিসাব বলছে মৃতের সংখ্যা ৪। ডায়রিয়া রোগী নিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল, বেতাগী, বামনা,পাথরঘাটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। হাসপাতালগুলোয় স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, ‘হঠাৎ করে ডায়রিয়ায় চাপ বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।’ এদিকে, বরগুনার বেতাগী হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে জনবল ও স্থান সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া স্যালাইনেরও সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন দ্রুত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতাল কম্পাউন্ড, মেঝে ও সিঁড়িতেও স্থান সংকুলান হচ্ছে না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় নতুন করে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স ছবি মন্ডল বলেন, ‘গত শুক্রবার থেকে গড়ে প্রতিদিনই ৫০-৬০ জন মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তবে দিন দিন সংখ্যা বেড়েই চলছে। বেসরকারি হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। করোনা আতঙ্ক ও এমনিতেই হাসপতালে জায়গা নেই। তাই অনেকেই বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আয়শা বেগম নামের এক রোগী বলেন, ‘এখানে দুর্ভোগের শেষ নেই। চিকিৎসকরা কাকে রেখে কাকে দেখবেন, বলা মুশকিল। ছেলের আশঙ্কাজনক অবস্থা। তাই না থেকে উপায় নেই।’ এরইমধ্েয স্যালাইনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বাইরের ফার্মেসি থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর জন্য স্যালাইন কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। এই সুযোগে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কোম্পানির লোকজন চড়া দামে স্যালাইন বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তেন মং বলেন, ‘সরকারিভাবে স্যালাইন কখন আসবে জানি না। তবে, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য তাৎক্ষণিকভাবে যে স্যালাইন দিয়েছেন, তা দিয়ে কয়েকদিন চালাতে পারবো।’ স্থানীয়দের অভিযোগ, এখন চড়া দামেও স্যালাইন মিলছে না। বেতাগী পৌর শহরের পাইকারি ওষুধ বিক্রেতা রনজিৎ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘গত মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) থেকে ৪-৫ দিন ধরে স্যালাইনের তীব্র সংকট চলছে। স্যালাইনের জন্য মানুষ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ডিপোতে চাহিদাপত্র দিয়েও স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। যার ৫টি স্যালাইন দরকার ছিল, তাকে ১টি দিয়ে কোনো রকমে বিদায় করে দেওয়া হচ্ছে।’ |