শিরোনাম: |
শিশুর হৃদরোগে যা করবেন
|
আমরা অনেকেই চিন্তা করি হার্ট বা হৃদপিণ্ডের সমস্যা শুধু বড়দেরই হতে পারে। একটা বয়সের পরে তাই নিয়মিত চেকআপের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু শিশুদেরও হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে সদ্যোজাত শিশুদের মধ্যেও হার্টের বড় রকম সমস্যা দেখা যায়। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এখন এই সমস্যার যথাযথ চিকিৎসাও আছে।
শিশুদের ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডের সমস্যা দুই প্রকারের হয়ে থাকে। প্রথমটি হলো জন্মগত। আর দ্বিতীয়টি জন্মের পরে হওয়া সমস্যা। অনেক সময়ে জন্ম নেয়া শিশুর হৃদপিণ্ডের মধ্যে ছিদ্র থাকে ও হৃদপিণ্ডের গঠন ঠিক মত হয় না। এই সমস্যাগুলোকে বলা হয় জন্মগত সমস্যা। এর ফলে হৃদপিণ্ড দিয়ে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা হয়। জন্মের সময়ে শিশুর হৃদপিণ্ডে হওয়া সমস্যাকে টিজিএ-ও বলা হয়। শিশুর জন্মগত হৃদপিণ্ডের সমস্যাকেও আবার দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমটিকে বলা হয় সায়ানোটিক। আর দ্বিতীয়টি হলো নন সায়ানোটিক। সায়ানোটিক সমস্যায় জন্মের পরেই শিশুর গায়ের রং নীল হতে থাকে। শিশু খেতে পারে না। অন্যদিকে নন সায়ানোটিক শিশুদের ক্ষেত্রে গায়ের রং পরিবর্তন হয় না। ফলে খুব দ্রুত এই রোগ ধরা পড়ে না। দেড় বা দুই মাস পরে থেকে দেখা যায় শিশুর ওজন বাড়ছে না। তার খাওয়া কমে যাচ্ছে ও খাওয়ার সময় শিশু ঘেমে যাচ্ছে। তখন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ ধরা পড়ে। সায়ানোটিক বা নন সায়ানোটিক দুই ধরনের সমস্যাতেই শিশুর মৃত্যু হতে পারে। তবে সায়ানোটিক এর ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। অন্যদিকে, নন সায়ানোটিকের ক্ষেত্রে শিশুর নানা শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। ফলে ধীরে ধীরে শিশু মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। তবে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করা হলে শিশুকে বাঁচানো সম্ভব। শিশুদের হৃদপিণ্ডের সমস্যা হলে অন্য অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে। কাওয়াসাকি ডিজিজ এই রোগ হলে শিশুর জ্বর হয়। ভাইরাসের সংক্রমণ হলে যেমন জ্বর হয় অনেকটা সেই ধরনের জ্বর আসে এবং সঙ্গে গা ব্যথা হয়। এর পাশাপাশি, চোখ ও জিভ ভীষণ লাল হয়ে যায়। রিউম্যাটিক হার্ট ডিজিজ এই রোগেরও প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর, গা ব্যথা আর সঙ্গে হাঁপানি। এই রোগটিই বর্তমানে শিশুদের মধ্যে বেশি হচ্ছে। মায়ো কাউটিস এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণও জ্বর ও শ্বাসকষ্ট। যদিও এই রোগের ফলে শরীর নীল হয়, ওজন কমে যায়, খেতে খেতে বাচ্চা হাঁপিয়ে যায়। হৃদপিণ্ডের সমস্যা সায়ানোটিক ধরনের হলে অস্ত্রোপচার অবশ্যই করাতে হয়। কী ধরনের অস্ত্রোপচার হবে তা চিকিৎসকই ঠিক করবেন। চিকিৎসকদের মত, ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো হলে শিশু ১০০ শতাংশই সেরে ওঠে। তবে জন্মগত সমস্যার ক্ষেত্রে একটু ঝুঁকি থাকে। সুস্থ হওয়ার পরে শিশু স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে। তবে জ্বর বা অন্য কোনো সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিতে হবে। একই সঙ্গে হার্ড গেম যেমন ভলি, বাক্সেটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলা থেকে দূরে থাকতে হবে। এছাড়া জন্মের আগে ফিটাল ইকো কার্ডিওগ্রাফি করানো হয়। এক্ষেত্রে আগে থেকে বোঝা সম্ভব যে, গর্ভস্থ ভ্রণের কোনো হার্টের সমস্যা রয়েছে কি না। জন্মানোর ২০ সপ্তাহ আগেই এই পরীক্ষা করানো যায়। |