বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, 2০২4
অর্ধেকেরও বেশি হাসপাতাল-ক্লিনিকের লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ
হাজারিকা অনলাইন ডেস্ক
Published : Friday, 31 July, 2020 at 9:58 AM

সম্প্রতি রিজেন্ট হাসপাতালে করোনার কেলেঙ্কারিসহ লাইসেন্স নবায়ন না থাকার ঘটনায় পর স্বাস্থ্য অধিদফতর বেসরকারি হাসপাতালগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করার বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, প্রতি বছর লাইসেন্স নবায়ন বাধ্যতামূলক হলেও হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলো এসবের তোয়াক্কা করে না সবকিছু ‘ম্যানেজ’ করে ফেলে। জানা গেছে, ২০১৮ সালে লাইসেন্স ও নবায়নের জন্য অনলাইনে আবেদনের পদ্ধতি চালু হয়। কিন্তু তাতে কোনও একটি শর্ত যদি পূরণ না হয় তাহলে রেজিস্ট্রেশন হয় না, নবায়নও হয় না। অনেকে ঠিকমতো শর্ত পূরণ করতে না পেরে আবেদন করছে না।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী, দেশে মোট ১৭ হাজার ২৪৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে পাঁচ হাজার ৪৩৬টি, চট্টগ্রাম বিভাগে তিন হাজার ৩৭৫টি, রাজশাহীতে দুই হাজার ৩৮০টি, খুলনায় দুই হাজার ১৫০টি, রংপুরে এক হাজার ২৩৬টি, বরিশালে ৯৫৭টি, ময়মনসিংহে ৮৭০টি এবং সিলেটে ৮৩৯টি। এসবের মধ্যে অনলাইনে লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে ১০ হাজার ৯৪০টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। লাইসেন্স রয়েছে মাত্র চার হাজার ৩৮৭টির। আর অধিদফতরের পরিদর্শনের অপেক্ষায় রয়েছে এক হাজার ৫২৫টি। বিভিন্ন শর্ত পূরণ না করতে পারায় ঝুলে রয়েছে চার হাজার ৫২৬টি।

অধিদফতর বলছে, দেশের অর্ধেকেরও বেশি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের লাইসেন্স মেয়াদেত্তীর্ণ। আর লাইসেন্সই নেই শতকরা ১০ শতাংশের। লাইসেন্স ছাড়াই এসব হাসপাতাল ক্লিনিক বাণিজ্য করছে বছরের পর বছর। মূলত ২০১৮ সালের পরই দেশের অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স এবং নবায়নের শিথীলতা আসে। তবে এজন্য জনবল সংকটও কিছুটা দায়ী বলে মন্তব্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের। তারা বলছেন, হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে কেবলমাত্র নোটিশ ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া ছাড়া আর কোনও পদক্ষেপ নিতে পারে না স্বাস্থ্য অধিদফতর।

স্বাস্থ্য অধিদফতরও বলছে, তাদের জনবল সংকটের কারণে সমস্যায় পড়তে হয়। একজন পরিচালকের অধীনে একজন সহকারী পরিচালক ও দুই জন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে তাদের হাসপাতাল পরির্দশের কাজ চলে। নবায়ন না করলে কিছু হয় না! শর্ত পূরণ ছাড়া লাইসেন্স নিতে পারবে না কেউ। আবার লাইসেন্সের শর্ত ভাঙলে বা নবায়ন না করলে সেটি বাতিলও হতে পারে। কিন্তু লাইসেন্স বাতিলের ঘটনা নেই তেমন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ২০১৮ সালে ঢাকার ৩০টি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিককে ১৫ দিনের জন্য সাময়িক বন্ধ রেখেছিল অধিদফতর, কিন্তু সেগুলো পুনরায় চালু হয়েছে। তার কোনও ফলোআপ করা হয়নি। গত দুই বছরে একটি মাত্র হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল হয়েছে।

অধিদফতরের উপ-পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ইউনুস আলী বলেন, লাইসেন্স বাতিল করতে পারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অধিদফতর কেবল পারে হাসপাতালগুলোতে সতর্ক করতে আর সাময়িক বন্ধের জন্য নোটিশ দিতে। যেমনটা করা হয়েছে রিজেন্টের বেলায়। একইসঙ্গে তারা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি দিতে পারে, যেমনটা করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ( হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেন, তিনি মাত্র গত সপ্তাহে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন, সবকিছু এখনও গুছিয়ে উঠতে পারেননি।

তারপরও বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন কবে নাগাদ আপডেটেড হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটু সময় লাগবে। অনেকদিন ধরেই কোনও লাইসেন্স ইস্যু হয়নি, জ্যাম লেগে আছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি সে জট ছাড়ানোর কাজ আমরা শুরু করবো। এদিকে, যারা আগে ম্যানুয়ালি লাইসেন্স নিয়েছে তাদেরও অনলাইনে লাইসেন্স নিতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ডা. আয়শা আক্তার বলেন, মূলত অনলাইনে আবেদন করার নিয়মের পর থেকেই লাইসেন্স নেওয়ার ক্ষেত্রে এক ধরনের শিথীলতা এসেছে। তবে সম্প্রতি লাইসেন্স নবায়ন নেই এমন হাসপাতাল ক্লিনিকের তালিকা করা হচ্ছে। আরও কাজ চলছে। যাদের লাইসেন্স নেই বা নবায়ন করেনি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লাইসেন্স ছাড়াও অনেক হাসপাতাল-ক্লিনিক রয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, তাদের সংগঠনের সদস্য ১০ হাজারের বেশি। যাদের লাইসেন্স নেই বা নবায়ন নেই তাদের বিরেুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরকে অনেকবার বলা হয়েছে, পত্রিকাতেও সংগঠনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। তবে এবারে কোভিড-১৯ এর কারণে অনেক হাসপাতালই লাইসেন্সের কাজ করতে পারেনি জানিয়ে তিনি বলেন, অনলাইনের নানা ইস্যুর কারণে অনেকে নবায়ন করতে পারছে না। সবকিছু আগে ঠিক করতে হবে। নয়তো এটা ঝামেলা হয়ে যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল হাজারী।   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: গোলাম কিবরীয়া হাজারী বিটু্।   প্রকাশক: মোঃ ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
সহ সম্পাদক- রুবেল হাসান: ০১৮৩২৯৯২৪১২।  বার্তা সম্পাদক : জসীম উদ্দিন : ০১৭২৪১২৭৫১৬।  সার্কুলেশন ম্যানেজার : আরিফ হোসেন জয়, মোবাইল ঃ ০১৮৪০০৯৮৫২১।  রিপোর্টার: ইফাত হোসেন চৌধুরী: ০১৬৭৭১৫০২৮৭।  রিপোর্টার: নাসির উদ্দিন হাজারী পিটু: ০১৯৭৮৭৬৯৭৪৭।  মফস্বল সম্পাদক: রাসেল: মোবা:০১৭১১০৩২২৪৭   প্রকাশক কর্তৃক ফ্ল্যাট নং- এস-১, জেএমসি টাওয়ার, বাড়ি নং-১৮, রোড নং-১৩ (নতুন), সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং সিটি প্রেস, ইত্তেফাক ভবন, ১/আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩ থেকে মুদ্রিত।  বার্তা, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ০২-৪১০২০০৬৪।  ই-মেইল : [email protected], web : www.hazarikapratidin.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি